নিজস্ব প্রতিনিধি: একদিকে সিনেমা, অন্যদিকে রাজনীতি। বর্তমানে টক অফ দ্য টাউন টলিউড সুপারস্টার দেব। ইডির তলব, লোকসভা নির্বাচনে না দাঁড়ানোর জল্পনা, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিটিং, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলা ধন্যবাদ তাঁকে রাজনীতিতে যুক্ত করার জন্যে, বাজেট অধিবেশনে শেষবার সংসদে বক্তৃতা, ইডির তলব-সহ একাধিক রাজনৈতিক জল্পনার এখন কেন্দ্রে রয়েছেন সুপারস্টার দেব। দেখতে দেখতে রাজনীতিতে ১০ এবং ইন্ডাস্ট্রি তে ১৮ বছর কাটিয়ে ফেললেন তিনি। রচনা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘অগ্নিশপথ’ দিয়ে টলিউডে আত্মপ্রকাশ তাঁর। মুম্বই থেকে মাত্র ১ মাসের জন্যে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি, কিন্তু ভালোবাসায় মুড়ে ১৮ বছর কাটিয়ে ফেললেন কলকাতায়। সম্প্রতি ইন্ডাস্ট্রিতে ১৮ বছরে পা দিয়েছেন অভিনেতা। তবে ১৮ বছর তাঁর কাছে সামান্য, তিনি ৪০ বছর কাটাতে চান। প্রসেনজিৎ, রজনীকান্ত, মিঠুন চক্রবর্তী-সহ একাধিক তারকা তাঁর ইন্সপিরেশন।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানালেন, বাংলাকে গ্লোবাল দুনিয়ায় পৌঁছে দিতে চান তিনি।তবে এতগুলো বছরে মানুষের কাছে অনেক ভালোবাসা পেয়েছেন তিনি, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে মাঝে মধ্যে লোকজনের ক্ষোভের মুখে পড়ছেন তিনি। কিন্তু তাতে একেবারেই কোনও অভিযোগ নেই তাঁর, বরং সৎ থেকে মানুষের বিনোদন ও মানুষের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি। তবে মুম্বইতে বেড়ে উঠেছেন অভিনেতা, তাই বাংলা ভাষাও জানতেন না তিনি। ধীরে ধীরে বাংলা ভাষা রপ্ত করাটাও তাঁর পক্ষে চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে প্রথম ছবি অগ্নিশপথ তাঁর কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বাংলার বিখ্যাত প্রযোজনা সংস্থা SVF এর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটে। তবে অভিনেতা নাহলে কোনও বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন দেব নয়তো চুটিয়ে মডেলিং করতেন। ভেবেছিলেন, ১ মাস কলকাতায় থেকেই মুম্বই চলে আসবেন তিনি, কিন্তু ভগবানের খেল, ১৮ বছর কলকাতায় টিকে গেলেন অভিনেতা। তাঁকে আগামীতে টেক্কা, খাদানে দেখা যাবে।
দুটি ছবিই তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জিং। টেক্কাতে জমাদারের ভূমিকায় অভিনয় করবেন দেব। একটি অন্য ছন্দে নিজেকে তুলে ধরবেন তিনি এই ছবিতে। তবে খাদানে তাঁর ভূমিকা দর্শক দের সিনেমা হলে টেনে আনবে বলে তাঁর বিশ্বাস। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আসানসোলে শুটিং শুরু হবে খাদানের। তবে একদিকে রাজনীতিবিদ অন্যদিকে অভিনেতা এবং প্রযোজক, বিষয়গুলিকে কেমনভাবে সামলান দেব, এই বিষয়ে একটি বেসরকারি সংস্থার সাক্ষাৎকারে দেব বলেন, রাজনীতি এবং অভিনয় দুটোই ডেডিকেশন এবং সততা নিয়ে কাজ করেন তিনি। কোনও পদের উপর কোনও মোহ নেই তাঁর। রাজনীতি ছেড়ে দেবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু রাজ্য সরকার যখন ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’ নিয়ে আশা দেখাল সেটার জন্য আবার ফিরলেন তিনি। তবে তাঁর কোনও পদ চাই না। নির্বাচনের আগে যাতে দলের কোনও ক্ষতি না হয়, সেই কারণেই দলের পাশে বরাবর থাকবেন তিনি। সন্দেশখালির বর্বরতা নিয়ে অভিনেতার বক্তব্য, সাধারণ মানুষ যা নিয়ে সুখী থাকে, সরকারের উচিত সেটাই করা। আর ইডির ডাকে নিশ্চয়ই সাড়া দেবেন তিনি। দেশের মানুষের প্রতি তাঁর কর্তব্যকে সবসময় এগিয়ে রাখেন তিনি। প্রসঙ্গত, আর্থিক তছরূপ মামলায় অভিনেতাকে আগামী বুধবার দিল্লির ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের পর এবার আর্থিক তছরূপ মামলায় দেবকে ডেকে পাঠাল ইডি। তবে দেব ইডি দফতরে যাবেন। তবে এর আগে যখন সিবিআই দেবকে ডেকে পাঠিয়েছিল, তখনও কিন্তু দেব গিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ ঘণ্টা দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, গরু পাচারকাণ্ডে বিভিন্ন সাক্ষীকে জেরা করার সময়ে দেবের নামটি উঠে এসেছিল। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, এমন একটা সময়ে দেবকে সমন পাঠাল ইডি, যখন দেবের ঘাটাল থেকে ফের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার খবর প্রকাশ্যে আসছে।