নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৯৩৮-এর ৪ ফেব্রুয়ারি লখনৌতে জন্ম। ২০২২-এর ১৬ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে পণ্ডিত বিরজু মহারাজের। নাতির সঙ্গে খেলতে খেলতেই আচমকাই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন বিরজু মহারাজ। তারপরেই দিল্লির সাকেত হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওনাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। চিরতরে থেমে গিয়েছে ঘুঙুরের শব্দ। পণ্ডিত বিরজু মহারাজের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা বলিউডে। সবচেয়ে বেশি শোকাহত হয়েছেন তাঁর শিষ্যা মাধুরী দীক্ষিত। গুরুর চলে যাওয়ায় শোকবার্তায় মাধুরী জানিয়েছেন, ‘উনি লেজেন্ড ছিলেন কিন্তু আচরণ করতেন শিশুর মত। আমার গুরু হলেও বন্ধু ছিলেন। আমাকে নাচ ও অভিনয় দুই শিখিয়েছেন কিন্তু হাসাতে কোনওদিন ভুলে যান নি। একটা পরম্পরা ফেলে রেখে গিয়েছেন উনি। যেটা আমাদের বয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাকে যা শিখিয়েছেন সেই সব কিছুর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। কোটি কোটি প্রণাম।’
১৯৫২ সালে এই শহরেই জীবনে প্রথম মঞ্চে পারফর্ম করেন। মন্মথ নাথ ঘোষের বাড়িতে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৪ বছর। বাবা মারা গিয়েছেন। জীবনে দাঁড়াবার জন্য লড়াই করছেন। সে সময় ডাক কলকাতায়। কাকা লচ্ছু মহারাজ তখন মুম্বইয়ে কোরিওগ্রাফির কাজ করছেন। আর এক কাকা শম্ভু মহারাজ ব্যস্ত ছিলেন লখনউতেই নিজের কাজে। মা এক পাতানো ভাইয়ের সঙ্গে কলকাতায় পাঠিয়েছিলেন বিরজুকে। ধীরে ধীরে এই শহরেই নিজেকে মেলে ধরেছিলেন এই শিল্পী। তবে শুধু কলকাতায় তাঁকে আটকে থাকতে হয়নি। কলকাতা ছাড়িয়ে, বাংলা ছাড়িয়ে, বিরজুর কত্থক ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের আনাচে কানাচে। দেশ-বিদেশে বহু অনুষ্ঠান করেছেন। দেশে মাটিতে তো বটেই বিদেশেও রয়েছে তাঁর প্রচুর ছাত্রছাত্রী। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একাধিক ধারার সঙ্গে যেমন যুক্ত ছিলেন মহারাজ। বাংলা থেকে বলিউড মায় মারাঠী সিনেমাতেও কোরিওগ্রাফারের কাজও করেছেন বিরজু মহারাজ। ক্লাসিক্যাল সিঙ্গার হিসেবেও পরিচিতি ছিল বিরজু মহারাজের। ১৯৮৬ সালে পদ্মবিভূষণ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন বিরজু মহারাজ।
শুধুই মাধুরী নয়, বর্ষীয়ান অভিনেতা কমল হাসান থেকে শুরু করে অনুপম খের, বর্তমান প্রজন্মের জাহ্নবী কাপুর, অনন্যা পাণ্ডে-রাও শোকবার্তা জ্ঞাপণ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।