নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রবিবার বাগদেবীর সঙ্গে সঙ্গেই নিরঞ্জন হয়েছে তাঁর মানসকন্যা লতা মঙ্গেশকরের। করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ৮ জানুয়ারি ভর্তি হন লতা। কিন্তু সেই জীবনযুদ্ধ থেমে যায় ৬ ফেব্রুয়ারি। সুর সম্রাজ্ঞীর মৃত্যুসংবাদ দেওয়া হল না আরেক বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। কয়েকদিন আগে লতা মঙ্গেশকরের পাশাপাশি গীতশ্রীর শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন তাঁর ভক্ত ও বাংলার মানুষ। করোনামুক্ত হলেও এখনও সঙ্কটমুক্ত নন সন্ধ্যা। প্রবলভাবে দুর্বল তিনি। তাই এমন দুঃসংবাদের ধাক্কা সামলে ওঠার মত ক্ষমতা তাঁর এখন নেই। তাই তাঁকে সুর সম্রাজ্ঞীর প্রয়াণের খবর দেওয়া হয়নি।
লতা মঙ্গেশকরের থেকে মাত্র ২ বছরের ছোট সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মুম্বইয়ে কেরিয়ার শুরু করেন পাঁচের দশকে। সেই সময় লতা ও সন্ধ্যা দুজনেই কেরিয়ারের মধ্যগগনে। একসময় তাঁদের দুজনের মধ্যে রেষারেষির কথাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু তা কখনই স্বীকার করেননি তাঁরা দুজনে। বরং এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁরা হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি শোনা যায় লতা নাকি গীতশ্রীর মায়ের হাতের রান্না খেতে খুব ভালোবাসতেন। মুম্বইয়ের যে হোটেলে এসে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় উঠতেন সেই হোটেলে প্রায়ই আসতেন লতা। গীতশ্রীর মায়ের হাতের নিরামিষ পদ মন ভরে খেয়ে চলত দুজনের আড্ডা।
টানা ২৭ দিন হাসপাতালে জীবনযুদ্ধে লড়ে গিয়েছেন কিন্নরকন্ঠী। কখনও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তাঁর পরিবার ও ভক্তকুল। কখনও আবার তাঁর সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে বেড়েছে সকলের মনে দুশ্চিন্তা। এই দোলাচলের মধ্যেই রবিবার শেষ হয়ে গেল একটা অধ্যায়। কয়েক প্রজন্মকে তাঁর এই কণ্ঠের মাধুর্যে বুঁদ করে রেখেছিলেন ভারতের সরস্বতী। রবিবার থেমে গেল সেইসব কিছু। তবে তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি অমর হয়ে থাকবেন প্রতিটি মানুষের মনে।