২০১০: উরুগুয়ে বনাম ঘানা কোয়ার্টার ফাইনাল
নিজস্ব প্রতিনিধি: এক যুগ আগে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসেছিল আফ্রিকা মহাদেশের অন্তর্গত দক্ষিণ আফ্রিকায়। আর প্রথম রাউন্ডে আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ বিদায় নিলেও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল ঘানা। গোটা মহাদেশের বাসিন্দারা তাকিয়ে ছিল সুলে মুনতারি, আসামোয়া জিয়ান, জর্জ মেনসাহদের দিকে। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিলেন উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ। ম্যাচের শেষ মিনিটে ঘানার নিশ্চিত গোল হাত দিয়ে রুখে দলকে সেমিতে নিয়ে যান।
জোহানেসবার্গের সকার সিটি স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের শুরু থেকেই প্রচণ্ড আক্রমণ করে খেলতে থাকে দুই দল। সুয়ারেজ, ফোলানদের মুহুর্মুহু আক্রমণে নাভিঃশ্বাস উঠেছিল ঘানার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের। বেশ কয়েকটা অতিমানবীয় সেভ করে দলের নিশ্চিত পতন রুখে দেন ঘানার গোলকিপার রিচার্ড কিংসন। প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটে কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে মাথা ছুঁইয়ে উরুগুয়ের জালে বল গলিয়ে দলকে এগিয়ে দেন ঘানার রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড় ভোরসা। অনেক চেষ্টা করেও শেষ ১৫ মিনিটে ঘানার রক্ষণভাগকে পরাস্ত করতে পারেনি উরুগুয়ে। বিরতির ঠিক ১০ মিনিট বাদে ডি-বক্সের বাইরে ফাউল করায় ফ্রি-কিক পায় উরুগুয়ে। আর সেই ফ্রি-কিক থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ঘানার জালে বল গড়ান দিয়েগো ফোরলান। দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না ঘানার গোলরক্ষক কিংসনের।
পরের ৩৫ মিনিটে দুই দল ঝাঁপালেও গোল হয়নি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। শেষ লগ্নে আচমকাই নাটকীয় মোড়। ফ্রি-কিক পায় ঘানা। হাওয়ায় বল ভাসিয়ে দেন প্যান্টসিল, আন্দ্রে আইয়ুর মাথায় ড্রপ খেয়ে বল গেল কেভিন প্রিন্স বোয়াতাংয়ের দিকে। হাত দিয়ে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলেন উরুগুয়ের কিপার ফার্নান্দো মুসলেরা। বল হাতে রাখতে পারলেন না তিনি। চিতার গতিতে সামনে এগিয়ে এসে হেড করলেন আদিয়াহ। বল জালে ঢোকা সময়ের পরিত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হলেন সুয়ারেজ। গোলে ঢোকার মুহুর্তে হাত দিয়ে বল বাইরে বের করে দিলেন। পেনাল্টি পেল ঘানা। সেই সঙ্গে লাল কার্ড দেখলেন সুয়ারেজ। পেনাল্টি নিতে এগিয়ে এলেন আসামোয়া জিয়ান। বল বাইরে পাঠিয়ে দিলেন। মাঠে তখন যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। খেলা গড়াল টাইব্রেকারে। আর সেখানে জতল ফোরলানের দল।