আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কথায় বলে, ‘স্বভাব যায় না ম’লে’। দেশের মাটিতে ছোটখাটো অপরাধ আড়াল করতে পুলিশকে ঘুষ দেওয়া বাংলাদেশীদের মজ্জাগত হয়ে উঠেছে। কিন্তু স্বদেশ আর বিদেশের মধ্যে যে ফারাক রয়েছে, তা ভুলেই গিয়েছিলেন হোসাইন মোহাম্মদ শাকিব নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মালয়েশিয়ার পুলিশকে ঘুষ দেওয়ার মতো অপকর্মের দায়ে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের কারাবাস ভোগের আদেশ দিয়েছে সে দেশের আদালত।
মায়েশিয়ার প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘স্ট্রেইট টাইমস’ জানিয়েছে, ‘করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের কারণে গত বছরের প্রথম দিকে সাধারণ মানুষের চলাফেরার ক্ষেত্রে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ১০ মার্চ সুংকাই টোল প্লাজা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে বের হওয়ার মুখে দুই বন্ধু সহ পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়েন শাকিব। পুলিশের কাছ থেকে তাঁদের কাছে অনুমতিপত্র দেখতে চাওয়া হয়। কিন্তু কোনও অনুমতি দেখাতে পারেননি। উল্টে ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত এক পুলিশ পরিদর্শককে ১৫০ রিঙ্গিত ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় শাকিব।
মালয়েশিয়ায় ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া-দুইই দণ্ডণীয় অপরাধ। ঘুষ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে শাকিবের বিরুদ্ধে মালয়েশিয় পেনাল কোডের ২১৪ ধারায় মামলা করা হয়। মঙ্গলবার আদালতের বিচারক রায় দেওয়ার আগে বক্তব্য জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়ে শাকিব। কান্নাজড়িত গলায় তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার একটি কারখানায় কর্মরত সে। মাসে এক হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার টাকা) বেতন পান। বাংলাদেশে তার দুই সন্তানসহ পরিবারে আরও পাঁচজন রয়েছে। তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। ফলে অনিচ্ছাকৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা করে দেওয়া হোক।’ যদিও তাঁর আর্জিতে মন গলেনি বিচারকের। পুলিশকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে ১০ হাজার মালয়েশিয় রিঙ্গিত জরিমানা করেন।