এই মুহূর্তে




২০ জন জীবিত ইজরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে হামাস

নিজস্ব প্রতিনিধি: গাজা উপত্যকায় দীর্ঘদিনের সংঘাতের আবহে অবশেষে একটি বড় সুখবর! চরম অনিশ্চয়তার মেঘ কাটিয়ে হামাস সংগঠন ঘোষণা করেছে যে তারা গাজায় তাদের হেফাজতে থাকা ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। আরব দেশগুলোকে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে রেখে এই বার্তা ইজরায়েলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, এই বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়া এই রবিবার (১৩ অক্টোবর) থেকেই শুরু হতে পারে! দীর্ঘদিনের জল্পনা শেষে হামাস এই প্রথম নিশ্চিতভাবে বন্দির সংখ্যা জানাল যা নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

এই ঐতিহাসিক ঘোষণাটি এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া একটি চুক্তির পর। সেই চুক্তি অনুসারে, হামাসকে তাদের হেফাজতে থাকা সকল ইজরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। ইজরায়েলের প্রাথমিক অনুমান ছিল যে গাজায় ২০ জন জীবিত বন্দি ছাড়াও আরও প্রায় ২৮ জনের মৃতদেহ রয়েছে। এদিকে হামাস জানিয়েছে, কিছু মৃত বন্দির অবস্থান সম্পর্কে তারা অবগত নয়। ফলে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত ৭২ ঘণ্টার সময়সীমার মধ্যে সব বন্দিকে, বিশেষত মৃতদেহগুলিকে হস্তান্তর করা তাদের পক্ষে কঠিন হবে। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও প্রায় একই মত পোষণ করছে। তারাও মনে করছে, হামাসের কাছে সব বন্দি সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য নেই। এই তথ্যের ঘাটতিই বর্তমান শান্তি প্রক্রিয়ার পথে প্রধান বাধা।

বন্দিদের গ্রহণ করার জন্য ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। একজন ইজরায়েলি কর্মকর্তার বক্তব্য অনুযায়ী, বন্দিদের গ্রহণ প্রক্রিয়া এই রবিবার রাত থেকেই শুরু হতে পারে। তবে, সেটি সম্ভবত পরের দিন সোমবার (১৪ অক্টোবর) থেকেই হবে। সেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং ইজরায়েল এবং মিশর সফরে যাবেন। এই সময়সূচি চুক্তির নির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, যা শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপস্থিতি এই বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়াটিকে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও বেশি গুরুত্ব এনে দেবে।

গাজায় চলমান তীব্র যুদ্ধের কারণে বর্তমানে হামাসের কাঠামো ছিন্নভিন্ন এবং মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে সব বন্দিকে দ্রুত খুঁজে বের করে একত্রিত করা হামাসের জন্য সত্যিই একটি দুরূহ কাজ। বিশেষ করে, মৃত বন্দিদের অবস্থান সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই,  তাদের খুঁজে বের করার জন্য একটি সম্মিলিত আন্তর্জাতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই টিমে থাকবে তুরস্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের প্রতিনিধিরা। এই আন্তর্জাতিক দলটি গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিবিড়ভাবে অনুসন্ধান চালাবে, যাতে সকল ইজরায়েলি নাগরিককে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।

এই ঘটনা ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষের দীর্ঘ ইতিহাসে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মোড়। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই ভয়াবহ সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই পুরো সময়ে বন্দি মুক্তির প্রশ্নটি সংঘাতের একেবারে কেন্দ্রে ছিল। হামাসের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে শান্তির এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

তবে, মৃতদেহগুলির সন্ধানে বিলম্বের আশঙ্কা যুদ্ধের সময়সীমাকেও বাড়িয়ে দিতে পারে। সামরিক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০ জন জীবিত বন্দির মুক্তির ঘোষণা একটি অত্যন্ত ইতিবাচক সংকেত। তবে, চূড়ান্ত এবং সম্পূর্ণ সাফল্য নির্ভর করবে ইজরায়েল এবং হামাস- উভয় পক্ষের আন্তরিক সহযোগিতা এবং চুক্তির শর্তাবলী পূর্ণ করার সদিচ্ছার উপর।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

মায়ানমারের রাখাইনে অতর্কিতে হামলা আরাকান আর্মির, মৃত ৩০ জন জান্তা সেনা

সৌদি যুবরাজের জন্য বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন ট্রাম্পের, অতিথি এলন মাস্ক-রোনাল্ডো-অ্যাপলের সিইও

মর্মান্তিক! অস্ট্রেলিয়ায় ৮ মাসের গর্ভবতী ভারতীয় মহিলাকে পিষে মারল বিএমডাব্লু গাড়ি

লেবাননে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইজরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত ১৩, আহত বহু

‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’, শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে সংযমী প্রতিক্রিয়া চিনের

বিশ্বজুড়ে ফের মুখ থুবড়ে পড়ল ‘এক্স’, চরম সমস্যায় ব্যবহারকারীরা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ