নিজস্ব প্রতিনিধি, ইসলামাবাদ: ‘প্যান্ডোরা পেপারস’ কার্যত দেশের রাজনীতিবিদ, আমলা ও সাংবাদিকদের বিদেশে বিপুল অর্থ পাচারের পর্দা ফাঁস করে দিয়েছে। বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারে জড়িত থাকায় দেশের সাত শতাধিক ব্যক্তির নাম ফাঁস হয়েছে। তার মধ্যে বর্তমান মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যের নামও রয়েছে। আর তাতেই বিপাকে পড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বিরোধী নেতারা।
যদিও পদত্যাগের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। উল্টে অভিজাতদের বেআইনি অর্থ পাচারের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসায় ‘প্যান্ডোরা পেপারস’কে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে যাঁদের নাম প্রকাশ্যে এসেছে তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করার পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। যদিও তাতে বিতর্ক থামছে না।
পানামা পেপারসের পরে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে প্যান্ডোরা পেপারস। সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস’ এর পক্ষ থেকে গত কয়েক মাস ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে একাধিক দেশে বিভিন্ন ব্যক্তির অর্থ পাচারের পর্দা ফাঁস করা হয়। ‘প্যান্ডোরা পেপারসে’ যে সাত শতাধিক পাকিস্তানির নাম প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন, জলসম্পদমন্ত্রী মুনিস এলাহি, সিনেটর ফয়সাল ভাওদা, মুসলিম লিগ (এন) নেতা ইশহাক দারের ছেলে আলি দার, পিপিপি নেতা শারজিল মেমন, শিল্পমন্ত্রী খুসরো বখতিয়ারের পরিবার, পিটিআই নেতা আব্দুল আলিম খানের। এদের মধ্যে অনেকেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
‘প্যান্ডোরা পেপারসে’ পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতার নাম আসার পরেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বিঁধতে আসরে নেমেছে প্রধান বিরোধী দল মুসলিম লিগ (নওয়াজ)। সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের মহাসচিব আহসান ইকবাল কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘প্যান্ডোরা পেপারসে যাঁদের নাম প্রকাশ হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশই ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ। যিনি নিজেকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের চ্যাম্পিয়ন দাবি করেন তাঁর ঘনিষ্ঠরাই বিদেশে অর্থ পাচারে জড়িত। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিদেশি উপহারের তথ্য গোপন করেছেন। ফলে তাঁর আর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার অধিকার নেই। অবিলম্বে ইমরানের পদত্যাগ করা উচিত।’