নিজস্ব প্রতিনিধি: দিল্লিতে তৃণমূল প্রতিনিধিদের দিল্লি পুলিশের হেনস্থার জন্য নির্বাচন কমিশনকেই কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কর্তারা বিজেপির বশ্যতা স্বীকার করেছে। মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিয়েছে। তাই এনআইএ’র এসপি তথা ‘বিজেপি বান্ধব’ ধনরাম সিংহের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ দেওয়া সত্বেও ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস দেখাতে পারছে না।’
দিল্লিতে দলীয় নেতাদের দিল্লি পুলিশের হাতে হেনস্থার ঘটনা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘দিল্লিতে তৃণমূলের সাংসদরা কিছু দাবি নিয়ে কমিশনে দরবার করতে গিয়েছিলেন। অসুস্থ দোলা সেনকে টানা হেঁচড়া করে পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ানকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে গিয়েছে দিল্লি পুলিশ। দিনের আলোয় গণতন্ত্রের হত্যা হয়েছে।’ নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন উত্তরবঙ্গের ঝড়- ঝঞ্জায় বিধ্বস্ত ভেঙে যাওয়া বাড়িগুলি সারানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টাকা অনুমোদন করতে দিচ্ছে না। বাংলার মানুষের ভেঙে যাওয়া ঘর নতুন করে তৈরি হোক নির্বাচন কমিশন চাইছে না।’ ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের চেয়েও বাংলায় বিজেপির খারাপ ফল হবে বলে জানিয়ে দেন অভিষেক।
উল্লেখ্য, সোমবার বিকেলে চার সংস্থার অতি সক্রিয়তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে নালিশ জানায় তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে চার সংস্থার ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’ প্রধানকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়ারও অনুরোধ জানান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করার পরেই দফতরের বাইরে আচমকাই ধর্নায় বসেন তৃণমূল সাংসদরা। ২৪ ঘন্টা ধর্না দেওয়ার কথা ঘোষণাও করেন। আর ওই ধর্না শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তৃণমূলের প্রতিনিধিদের উপরে ‘গুন্ডার’ মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে অমিত শাহের ‘পোষ্য’ দিল্লি পুলিশের জওয়ান ও আধিকারিকরা। ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাগরিকা ঘোষদের টেনে হিঁচড়ে ও ধাক্কা মেরে তুলে দেওয়া হয় বাসে। পরে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দির মার্গ থানায়। দলের প্রতিনিধিদেরন হেনস্থার খবরেই ক্ষুব্ধ হন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই হেনস্থার প্রতিবাদ জানাতে এদিন সন্ধেতেই রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের(C V Anand Bose) সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান শহরের বাইরে থাকায় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদককে দেখা করার জন্য সময় বরাদ্দ করেনি রাজ্যপালের দফতর। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল পিংলা থেকে শহরে ফিরলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। রাতেই রাজভবনের তরফে জানানো হয়, রাত নয়টা নাগাদ রাজ্যপাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাৎ করার সময় দিয়েছেন। ওই বার্তা পাওয়ার পরেই রাজভবনে ছুটে যান অভিষেক-সহ তৃণমূল প্রতিনিধিরা। প্রতিনিধিদলে ছিলেন তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী শশী পাঁজা, ব্রাত্য বসু, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়, মালা রায়, অরূপ বিশ্বাস, কুণাল ঘোষ, অসীমা পাত্র।