নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে(Draupadi Murmu) উদ্দেশ্য করে করা কদর্য মন্তব্যের জেরে বাংলা জুড়ে জোর সমালোচনা ও বিরোধিতা শুরু হয়েছে রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির(Akhil Giri) উদ্দেশ্যে। রাজ্যের নানান মহল থেকে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। নিজেদের মতো করে এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাম ও কংগ্রেসও। তৃণমূলের(TMC) তরফেও জানানো হয়েছে তাঁরা এই মন্তব্যের দায়ভার নেবে না এবং এই অবাঞ্ছনীয় মন্তব্য তাঁরা সমর্থনও করেন না। কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে গেরুয়া ব্রিগেড মাঠে নেম পড়েছে রে রে করে। বাংলার বুকে তো বটেই জাতীয় স্তরেও তাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোর সাওয়াল করে তুলেছে। সেই সঙ্গে জায়গায় জায়গায় অখিল গিরির বিরুদ্ধে এফআইআর করার পাশাপাশি তাঁকে মন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করা, বিধায়ক পদ কেড়ে নেওয়া এবং তাঁকে গ্রেফতার করার দাবিও তুলেছে। পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদিবাসী সমাজকে অপমান ও হেয় করার অভিযোগও তুলেছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, গোটা ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে বাংলার শাসক দল। এই অবস্থায় দলের ভাবমূর্তি বাঁচাতে অখিল গিরি মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন গণধর্ষণকাণ্ডে গ্রেফতার হতে পারেন বৈদিক ভিলেজের ম্যানেজার
অখিল গিরির মন্তব্যের জেরে দল যে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু না কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছেন উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আবার দলের শৃঙ্খলারক্ষাকারী কমিটির সদস্যও। যদিও ঠিক কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে বা আদৌ নেওয়া হবে কিনা তা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তারই মাঝে এবার তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের কিছু নেতা অখিল গিরিকে মন্ত্রীর পদ থেকে স্বেচ্ছায় ইস্তফা দেওয়ার জন্য নাকি বলেছেন। যদিও প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কেউই মুখ খোলেননি। সূত্রের দাবি, অখিল নাকি সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়েছেন। তবে গোটা ঘটনা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি খোদ তৃণমূলসুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। মুখ খোলেননি দলের নম্বর টু নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মনে করা হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম জেলা সফরে গিয়ে বেলপাহাড়ী থেকে এই বিষয়ে মুখ খুলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কী বলেন তার পরেই দলের তরফে অখিলকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এমনকি অখিল নিজেও সেই দিকে লক্ষ্য রাখছেন যে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে দাঁড়ালে তিনি মন্ত্রী ও বিধায়কের পদ ধরে রাখবেন, অন্যথা দুটি পদ থেকেই পদত্যাগ করবেন। সেক্ষেত্রে দলের সব পদ থেকেও তিনি ইস্তফা দিতে পারেন।
আরও পড়ুন তৃণমূলের মঞ্চ পোড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার ৩ বিজেপি কর্মী
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তৃণমূল ঠিক কী করতে পারে! বিজেপির(BJP) আন্দোলন বা দাবিদাওয়া নিয়ে তৃণমূল বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। কেননা বিজেপির নেতারা মুখ কোন কুকথার বন্যা ছুটিয়ে বেড়ান তার ঢের ঢের নমুনা দেখেছেন বঙ্গবাসী। একই সঙ্গে এটাও সত্যি এই ইস্যুতে বিজেপি মাঠে যতই রে রে করে নেমে পড়ুন না কেন সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার আমজনতা বিন্দুমাত্র বিপ্লব দেখাছেন না। কেননা তাঁরাও জানেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা রাজ্যজুড়ে কেমন কুভাষার স্রোত বইয়ে দিয়েছেন। তাই বিজেপির আন্দোলন বা দাবিদাওয়া কোনও কিছুকেই পাত্তা দিতে চাইছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে এই বিষয়ে বাংলার ও দেশের আদিবাসী তথা মহিলামহলে যাতে দলকে নিয়ে কোনও ভুল বার্তা যায় তার জন্য হয়তো গিরিকে মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলতে পারে তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে সবটাই ঠিক হবে বেলপাহাড়ী থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন এই ইস্যুতে তা দেখেই।