কৌশিক দে সরকার: রাজনীতিতে চিরশত্রু বা চিরমিত্র বলে কিছু হয় না। তাই আজ যে ঘোর শত্রু কাল সে পরম মিত্র হয়ে উঠতেও বেশি সময় নেবে না। তাই ২০২২ সালের শেষের দিকে দেখা যাচ্ছে দেশের প্রধানমন্ত্রী(Prime Minister of India) ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর(Chief Minister of West Bengal) মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ কমছে। কেন্দ্র সরকার এমন বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যা বাংলার ক্ষেত্রে লাভবান হিসাবেই উঠে আসছে। একই সঙ্গে সঙ্ঘের তরফেও বঙ্গ বিজেপিকে কড়া বার্তা দেওয়া হচ্ছে বাংলা ভাগ নিয়ে আর কোনও রকমের হুজ্জতি না করতে। এইসব দেখেই তৃণমূল(TMC) ও বিজেপি(BJP) বিরোধিরা গোটা বিষয়টিকে ‘দাদা-দিদির সেটিংস’ বলে তুলে ধরলেও রাজনীতির ময়দানে তা আর ছাপ ফেলছে না। বরঞ্চ বাংলার প্রাপ্তির ঝুলি বাড়তে চলেছে আগামী নতুন বছরে। আর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বাংলার বুকে পা রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। আগামিকাল তাঁর হাত ধরেই বাংলা পেতে চলেছে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস(Vande Bharat Express)। আর ঠিক সেই মুহুর্তেই রেল সূত্রে জানা গেল আগামি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসেই বাংলা পেতে চলেছে দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যা মমতার(Mamata Banerjee) কলকাতার(Kolkata) সঙ্গে জুড়ে দেবে মোদির বারাণসীকে(Varanasi)। সেই ট্রেনের উদ্বোধনে কলকাতায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামিকাল হাওড়া ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধন হতে চলেছে দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। আপাতত সপ্তাহে ৬ দিন মিলবে এই ট্রেন। সকালে হাওড়া থেকে ছেড়ে দুপুরে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছাবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। সেখান থেকে আবার দুপুরে ছেড়ে তা রাতেই ফিরবে হাওড়া স্টেশনে। আপাতত সাড়ে ৭ ঘন্টায় একপিঠের যাত্রার সময় ধরা হয়েছে। নিত্যদিন এই ট্রেনে ঠিক কতজন যাত্রী পাওয়া যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে গেলেও একশ্রেনীর পর্যটকদের মধ্যে যে এই ট্রেন বেশ ভালই জনপ্রিয়তা পেতে চলেছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর এরই মাঝে জানা গিয়েছে বাংলা পেতে চলেছে দ্বিতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল মাস থেকেই তা চালু হয়ে যেতে পারে। হাওড়া ও বারাণসীর মধ্যে সেই ট্রেন দৌড়াবে। সকালে হাওড়া ছেড়ে দুপুরের মধ্যেই বারাণসী পৌঁছাবে সেই ট্রেন। ফিরতি পথে বারাণসী থেকে দুপুরেই ছেড়ে রাতে হাওড়া ঢুকবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। তবে সেই ট্রেন পাটনা হয়ে চলবে না গয়া হয়ে চলবে সেই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এখন হাওড়া ও কলকাতার দিক থেকে যে সব ট্রেন বারাণসী যায় তার মধ্যে সব থেকে কম সময় লাগে রাজধানী এক্সপ্রেসে। ৭ ঘন্টা ৫৫ মিনিট সময় লাগে তাতে। ওই ট্রেন যায় গয়া হয়ে। চেষ্টা করা হচ্ছে ওই পথেই বন্দে ভারতকে ছোটাতে যাতে ৬ ঘন্টায় ৬৬৩ কিমি পথ পাড়ি দেওয়া যায়। হাওড়া ও কলকাতার দিক থেকে বারাণসী যাওয়ার যাত্রী যেমন নিয়মিত বেশ ভালই পাওয়া যায় তেমনি টিকিটেরও আকাল থাকে মাঝে মধ্যে। একই সঙ্গে দিনে দিনে পৌঁছানোর সেই ভাবে ট্রেনের সংখ্যা বেশ কম। একমাত্র পূর্বা এক্সপ্রেস ভায় গয়া, লালকুঁয়া এক্সপ্রেস, পূর্বা এক্সপ্রেস ভায়া পাটনা, হাওড়া-নিউদিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেস সকালে ছেড়ে রাত ৮টা সাড়ে ৮টার মধ্যে যাত্রীদের বারাণসী ঢুকিয়ে দেয়। এছাড়া রাতের দিকে হাওড়া থেকে ছাড়া কিছু ট্রেন পরের দিন সকালে বারাণসী পৌঁছে দেয় যাত্রীদের। কিন্তু মাত্র ৬ ঘন্টায় সেখানে পৌঁছে দেওয়ার কোনও ট্রেন নেই। সেই হিসাবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হাওড়া ও বারাণসীর মধ্যে চালু হলে তা পর্যটক থেকে তীর্থযাত্রী ও ব্যবসায়ীদের কাছে বেশ লাভবান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।