নিজস্ব প্রতিনিধি: জগদ্ধাত্রী পুজোর ভাসানে তীব্রস্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজানো নিয়ে শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ কলকাতার(Kolkata) চিংড়িঘাটা(Chingrighata) এলাকার শান্তিনগরে(Shantinagar) বচসা বেঁধেছিল স্থানীয় বাসিন্দা তথা দুষ্কৃতী বিট্টু সর্দারের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই বচসা থামাতে গিয়ে বিট্টুর রোষের মুখ পড়েন এলাকারই অপর এক বাসিন্দা সাহেব আলি সর্দার। বিট্টু শুধু তাঁকে বেধড়ক মারধরই করেনি, তাঁর গলায় কাঁচিও ঢুকিয়ে দেয়। কাঁচির কোপে আরও এক জনের আঘাত লাগে। দুইজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকেরা সাহেবকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেই ঘটনার রোষে রবিবার সকালে চিংড়িঘাটা এলাকাতেই ক্ষুব্ধ জনতার হাতে ধরা পড়ে যায় বিট্টু। তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
জানা গিয়েছে, গতকালের রাতে খুনের(Murder) ঘটনার পরে পরেই গা ঢাকা দিয়েছিল বিট্টু। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও তাঁরা বিট্টুর নাগাল পাননি। কিন্তু এদিন সকালেই পুলিশের সামনেই উত্তেজিত জনতা বিট্টুকে চিংড়িঘাটা মোড়েই ধরে ফেলে। এদিন সকালে চিংড়িহাটা মোড়ের কাছে তাকে হাঁটতে দেখে একদল যুবক। তাঁরাই খবর দেন স্থানীয়দের। শান্তিনগর থেকে চিংড়িহাটার দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। খবর পাওয়া মাত্রই বিট্টুকে ধরতে ছুটে আসেন এলাকার একদল বাসিন্দা। বিট্টু সেই সময় চেষ্টা করেছিল একটি ট্যাক্সি করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে। কিন্তু ক্ষিপ্ত জনতা তাকে ট্যাক্সি থেকে বার করে মারধর শুরু করেন। বাঁশ, ইট দিয়ে চলে মারধর। রাগের চোটে যে যা হাতের কাছে পেয়েছেন তা দিয়েই বিট্টুকে মারধর করেন। সেই সময় এলাকায় ছিল পুলিশ। পুলিশের সামনেই চলে মারধর। কিন্তু, পর্যাপ্ত সংখ্যায় পুলিশ না থাকায় উত্তেজিত জনতাকে বাগে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। তাঁরা বিট্টুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে জনরোষ আছড়ে পড়ে তাঁদের ওপর। যে ট্যাক্সিতে করে বিট্টুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ সেই গাড়িতেও ব্যাপক ভাঙচুর চলানো হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় অবরোধও। শেষে কোনওক্রমে পুলিশ বিট্টুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, বিট্টুর ওপর এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল। শনিবারের ঘটনা তাতে ঘৃতাহুতি দেয়।
শনিবার রাতেই গা ঢাকা দিয়েছিল বিট্টু। রবিবার সকাল থেকে তাকে গ্রেফতার করার দাবিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষ। এর আগে একাধিক অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল বিট্টু। তাকে আগে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আবার এলাকায় ঢুকেছিল সে। এদিনের ঘটনায় বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা জানিয়েছেন, ‘দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে। এর আগেও বিট্টুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছিল। জেলও খেটেছে। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। শনিবার রাতের ঘটনা স্বতন্ত্র। উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’