নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রয়াত শঙ্কর নেত্রালয়ের প্রতিষ্ঠাতা(Founder of Sankara Nethralaya) শল্যচিকিৎসক তথা পদ্মভূষণ সেঙ্গামেদু শ্রীনিবাস বদ্রীনাথ(Dr S. S. Badrinath)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বদ্রীনাথ। মঙ্গলবার ভোরবেলা জীবনাবসান হয় তাঁর। সকাল সাড়ে ৯টার সময়ে চেন্নাইয়ের বিসন্তনগর শ্মশানে চিকিৎসকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর মৃত্যুতে কার্যত একটি যুগের অবসান ঘটল। তাঁর প্রয়াণে এদিন ট্যুইট করে শোকজ্ঞাপন করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী(Chief Minister of Bengal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। জানিয়েছেন, ‘চক্ষু চিকিৎসার ক্ষেত্রে অগ্রগামী এবং বিখ্যাত শঙ্করা নেত্রালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নেতা ডাঃ এস এস বদ্রীনাথ আর নেই সেটা জেনে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। ডাঃ বদ্রীনাথের মৃত্যু ভারতের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এবং বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে যেখানে তিনি গভীরভাবে অবদান রেখেছেন তার জন্য একটি বড় ক্ষতি। তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রশংসক এবং উত্তরসূরিদের প্রতি আমার সমবেদনা থাকছে।’
সেঙ্গামেদু শ্রীনিবাস বদ্রীনাথ ১৯৪০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। চেন্নাইতেই পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। বদ্রীনাথের এক আত্মীয়, যিনি দু’চোখেই দেখতে পেতেন না, তাঁদের সঙ্গে তাঁদের বাড়িতেই থাকতেন। বদ্রীনাথ তখন ছোট। অন্ধত্বের যন্ত্রণা খুব কাছ থেকেই সেই সময় উপলব্ধি করেন বদ্রীনাথ। এক জন অন্ধ ব্যক্তির যন্ত্রণা, অসহয়তা ভিতর থেকে নাড়া দেয় বদ্রীনাথকে। চিকিৎসক হয়ে পরে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর চক্ষু চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা এবং স্বপ্ন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই। মাদ্রাজ মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নিয়ে তিনি শেষমেশ নিউ ইয়র্ক ও আমেরিকায় গিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ঠিক তার ৪ বছর পরেই ১৯৭৪ সালে তিনি শঙ্কর নেত্রালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল স্বল্প টাকায় মানুষকে বিশ্বমানের পরিষেবা দেওয়া। মধ্যবিত্তের কাছে ক্রমেই ভরসার জায়গা হয়ে ওঠে এই প্রতিষ্ঠান।
চেন্নাইয়ের সেই শঙ্কর নেত্রালয় এখন চোখের চিকিৎসায় একেবারে নামকরা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে। চোখের চিকিৎসায় দেশে বিদেশে নাম ছিল বদ্রীনাথের। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে ছুটে যেতেন শঙ্কর নেত্রালয়ে। নিম্নবিত্ত মানুষদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল এই প্রতিষ্ঠান। বহু মানুষের কাছে আশা ভরসার অন্যতম জায়গা হয়ে উঠেছিল শঙ্কর নেত্রালয়। আর সেই ভরসা যিনি যোগাতেন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রাণ পুরুষ চলে গেলেন চিরতরে। রেখে গেলেন তাঁর প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে। যে প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার মানুষকে চোখের চিকিৎসা করিয়েছে।