নিজস্ব প্রতিনিধি: সোমবারই পেট্রল-ডিজেলে ভ্যাট কমানোর দাবিতে তুমুল বিক্ষোভ দেখাল বঙ্গ বিজেপি। এই বিক্ষোভের জেরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায় বিজেপির রাজ্য সদর দফতরের সামনে। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কড়া জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কার্যত বুঝিয়ে দিলেন পেট্রল ও ডিজেলের উপর থেকে রাজ্যে ভ্যাট কমানো হচ্ছে না। সোমবার দুপুরে নিউটাউনে সোমবার বিশ্ব বাংলা শারদসম্মান পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেখানেই তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করে বলেন, প্রবলেম শুধু একটাই। এত বেশি পেট্রল, ডিজেলে, গ্যাসের দাম বাড়ছে। মানুষের টাকাপয়সা এমনভাবে রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। রেল-সেল-ভেল সব বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্কিং সেক্টরে লেনদেন কম হচ্ছে। ফলে বেশি মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন। এরপরই তিনি জানিয়ে দিলেন, আমরাও এক টাকা করে ডিজেলে ছাড় দিয়েছি। আমরা কোথায় টাকা পাবো? তবুও আমরা ডিজেলে ছাড় দিয়েছি।
বিশ্ব বাংলা সারদ সম্মান প্রদান মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিলেন। তাঁর দাবি, এই গ্যাস, পেট্রল, ডিজেল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার চার লাখ কোটি টাকা তুলেছে। আজ ডিজেল না থাকলে জিনিসপত্রের দাম তো বাড়বেই। কৃষকেরা চাষ করবে কোথা থেকে? ডিজেল তো লাগে। এরপরই তাঁর তোপ, নিজেদের রাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। আমাদের টিকাই দেয় না। টাকা দেবে! আমাদের টাকা নেই। তবু রাজ্য সরকার প্রতি লিটার ডিজেলে এক টাকা করে ছাড় দিচ্ছে। পাশাপাশি তিনি রাজ্যের শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ছাত্র-যুবদের আমি বলবো এখানে প্রচুর ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হচ্ছে। নিউটাউনে এই কাছেই তৈরি হচ্ছে সিলিকন ভ্যালি ২.০। ভর্তুকি দিয়ে ১০০ একর জমি দিয়েছে হিডকো। সেখানে আইটি পার্ক হবে। আরও জমি আমরা দেব। আরও অনেক ইন্ডাস্ট্রি আসছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেন, বাংলায় যত প্রকল্প চালু আছে আর কোথাও দেখাতে পারবেন? সামাজিক সুরক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বর। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায় যা চিন্তা করেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল যা চিন্তা করেছিলেন তা একমাত্র আমরাই (তৃণমূল সরকার) বাস্তবে পরিনত করে দেখিয়েছি। তিনি আরও বলেন, এমন কোনও প্রকল্প নেই যা বাংলায় নেই। আমরাও ছোটবেলায় পড়াশোনা করতাম সব খাতায় লিখে লিখে। আজ সমস্ত কিছুই বিনা পয়সায়। ১০ লক্ষ টাকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা এই রাজ্যে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু হয়েছে। কৃষক, ক্ষেত মজুর, বর্গাদাররাও আর্থিক সুবিধা পান। মা বোনেদের সম্মান আজ আকাশতুল্য এই রাজ্যে।