নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপির(BJP) সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা(J P Nadda) ঠিক কাকে ঝাঁকুনি দিলেন? বঙ্গ বিজেপিকে নাকি দলেরই পূর্বতন ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে যার মুখ দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)? শনি সকালে নাড্ডা দলের যে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছেন তাতে দিলীপের নাম নেই। মানে দিলীপ ঘোষ আর দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি নন। তিনি এখন শুধুই মেদিনীপুরের(Midnapur) দলীয় সাংসদ(Member of Parliament) মাত্র। সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪’র ভোটে তাঁকে প্রার্থী নাও করতে পারেন নাড্ডা। বঙ্গ বিজেপির দিলীপ বিরোধীদের বক্তব্য, বারবার তাঁর মুখে লাগাম পরানোর চেষ্টা সত্ত্বেও দিলীপ তাতে কান দেননি। এই কারণেই তাঁকে দলীয় পদ থেকে সরানো হল। অন্যদিকে দলের আদি নেতাকর্মীদের দাবি, যে হেতু সামনেই লোকসভা নির্বাচন, তাই সাংসদ দিলীপকে নিজের এলাকায় সময় দেওয়ার সুযোগ করে দিতে সর্বভারতীয় দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। দাবি, পাল্টা দাবি, চলবে। তবে দিলীপের দর যে বঙ্গ বিজেপিতে কমিয়ে দেওয়া হল সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন ধান বিক্রিতে ফড়েদের ঠেকাতে কড়া নজরদারি রাজ্যের
গত কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল দিলীপকে সর্বভারতীয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে কেন্দ্রের মন্ত্রী করা হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে পরে দলীয় পদ থেকে সরানোই দস্তুর। তবে তার আগেই দিলীপকে সর্বভারতীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে অন্য ইঙ্গিত পাচ্ছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। বিজেপি শিবির বলছে, অনেক দিন ধরেই দিলীপকে নিয়ে অসন্তোষ ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। নিজের মতো করে কাজ করে, মন্তব্য করে তিনি দলের অনুশাসন মানছেন না বলে অভিযোগ ছিল। সেই কারণেই এটা একটা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ। যদিও দিলীপ সেটা বলছেন না। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি এখনও কোনও চিঠি পাইনি। তবে এটা শুনেছি যে, দলের সাংসদদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। সেটা লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই। সাংসদরা যাতে নিজের নিজের এলাকায় বেশি করে সময় দিতে পারেন, তাই এই পদক্ষেপ।’
আরও পড়ুন মগরাহাটে তৃণমূলকর্মী খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৪
দিলীপকে সরিয়ে দেওয়ার ফলে এখন বিজেপির সর্বভারতীয় কমিটিতে বাংলার প্রতিনিধি রইলেন শুধু অনুপম হাজরা। আগের মতোই তিনি সর্বভারতীয় সচিব পদে রয়েছেন। বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ বারেও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থাকছেন। নতুন কমিটিতে সবচেয়ে বড় বদল দিলীপের অপসারণই। এখনও পর্যন্ত দলের রাজ্য নেতৃত্ব এ নিয়ে চুপ। তাঁর অনুগামীরা দাবি করে থাকেন, রাজ্য বিজেপিতে পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে লোকসভা নির্বাচনে ফলের নিরিখে দিলীপই সর্বকালের সেরা রাজ্য সভাপতি। তাঁর জমানাতে দলের বিধায়ক সংখ্যা তিন থেকে ৭৭ হয়েছে। তবে দলীয় নিয়ম মেনে টানা দু’টি মেয়াদ রাজ্য সভাপতি থাকার পরে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একটা সময়ে সঙ্ঘের প্রচারক থাকা দিলীপ রাজনীতিতে আসার কিছু দিনের মধ্যেই রাজ্য সভাপতি হন। নিজে প্রথমে বিধায়ক এবং পরে সাংসদ হন। ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বরে তাঁকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়। কিন্তু তার পরেও নির্দিষ্ট করে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। বাংলাতে তো নয়ই, দেশের অন্য কোনও রাজ্যেও নয়। পরে ২০২২ সালের মে মাসে দেশজুড়ে বিজেপির বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচির সময়ে বাংলার বাইরে পাঁচটি রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দিলীপকে।