নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে বড় ধাক্কা নেমে এল রাজভবনে(Raj Bhawan)। লাটসাহেবের(Governor) খামখেয়ালিপনা আর পদ্মশিবিরের চক্রান্ত একসঙ্গে জোড়া ধাক্কা খেল দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court)। এদিন অর্থাৎ শুক্রবার দেশের শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বাংলার রাজ্যপাল আর এরাজ্যের কোনও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনও অন্তর্বর্তী উপাচার্য(Interim VC) নিয়োগ করতে পারবেন না। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এ কথা জানিয়েছে। বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্যপাল যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন, তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নিতে পারবেন না। অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের যা যা আপত্তি রয়েছে, তা পরের শুনানিতে আদালতে জানাতে হবে। তবে এই রায়ের পাশাপাশিই, সার্চ কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি রাখা নিয়ে রাজ্য সরকার যে আবেদন করেছিল, তাতে এখনই সাড়া দিতে রাজী হয়নি সুপ্রিম কোর্ট।
রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের(C V Anand Bose) সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাতের ফলে রাজ্যের ৩১টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও কোনও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা যায়নি। গত ২১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পর গত ১৫ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিজেই সার্চ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ আদালত। সেই সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা UGC-কে ৩ থেকে ৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম সুপারিশ করতে হবে সার্চ কমিটির জন্য। একই সঙ্গে, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যকেও প্রশ্ন করেছিল, কেন আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি রাজ্য সরকারের সঙ্গে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বৈঠকে বসেননি? সেই দিনই বিচারপতি সূর্য কান্ত জানিয়েছিলেন, তাঁরা রাজ্যপালের উত্তরের ওপর নির্ভর করে বসে থাকবেন না।
সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সব পক্ষ নাম সুপারিশ করলেও সার্চ কমিটি এখনও তৈরি হয়নি। তা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গত ১ অক্টোবর রাজ্যের আরও ৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভাবে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল। তাঁদের মধ্যে এক জন আবার অবসরপ্রাপ্ত IPS অফিসার। সেই সময়েই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। এরই পাশাপাশি, রাজ্যপালের প্রতিনিধি হিসাবে যে ৪ জনের নাম জমা পড়েছিল, তাঁদের দু’জনের বিষয়েও শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে মিলেছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রে। তার পর সুপ্রিম কোর্টের এই শুনানিতে বড় ধাক্কা খেলেন রাজ্যপাল।