নিজস্ব প্রতিনিধি: অবশেষে নড়েচড়ে বসল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর(West Bengal School Education Department)। রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা(Teachers) যাতে কোনও ভাবেই প্রাইভেট টিউশানি(Private Tuition) করতে না পারেন তার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। সোমবার রাতে এই বিজ্ঞপ্তি(Notice) জারি করা হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সব সরকারি স্কুল, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল, মডেল স্কুল এবং এনআইজিএসগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবার থেকে আর কোনও ভাবেই প্রাইভেট টিউশান করতে পারবেন না। এই নিয়মের অন্যথা হলে তার চাকরিও কেড়ে নিতে পারবে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। আটকে দেওয়া হতে পারে পেনশানও। এই নির্দেশ যাতে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হয় তার জন্য রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে ওই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে নোটিস পাঠানো হচ্ছে।
রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশানির রোগ দীর্ঘদিনের। আর তা নিয়ে গৃহশিক্ষকদের(Private Tutors) ক্ষোভও দীর্ঘদিনের। বাম জমানাতেই আইন করে সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশানি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু তারপরেও দেখা যায় ওই সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা চুটিয়ে প্রাইভেট টিউশানি করে চলেছেন। কেউ নিজের বাড়িতে, কেউবা ভাড়া বাড়িতে। অনেকে আবার কোচিংয়ের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতী, গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠন স্কুল শিক্ষা দফতরে প্রমাণ সহ ৬১জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় যে তাঁরা নিয়মলঙ্ঘণ করে প্রাইভেট টিউশানি করে চলেছেন। মনে করা হচ্ছে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরেই এবার নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। তার জেরেই সোমবার রাতে ওই নোটিস বার করা হয়েছে।
আগে রাজ্যের মডেলস্কুল ও এনআইজিএসগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই আইনের আওতায় ছিলেন না। কিন্তু রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে সোমবার রাতে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে এই দুই ধরনের স্কুলগুলিকেও এই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। রাজ্যের তৈরি শিক্ষকদের আচরণ বিধিতে প্রাইভেট টিউশানি না করার কথা বলা আছে। শিক্ষার অধিকার আইনেও সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রাইভেট টিউশানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও প্রাইভেট টিউশন চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিরা। সোমবারের বিজ্ঞপ্তিতে এটাও বলে দেওয়া হয়েছে এবার থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজ বাড়িতে, ভাড়া বাড়িতে বা কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট টিউশানি করছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের। সেই সঙ্গে স্কুল শিক্ষা কমিশনার এই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছেন নিয়মের লঙ্ঘণ দেখলেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা ওই দোষী শিক্ষক বা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।