নিজস্ব প্রতিনিধি: স্কুল চলাকালীন সময়ে ক্লাসে শিস দেওয়া অপরাধ অবশ্যই। কিন্তু তার জন্য মাথার চুলে কাঁচি চালানো ঠিক না বেঠিক তা নিয়ে তর্ক হতেই পারে। আর সেই তর্কই এবার জাঁকিয়ে বসেছে উত্তর শহরতলির দক্ষিণেশ্বরে(Dakshineshwar)। কেননা দক্ষিণেশ্বরের আড়িয়াদহ কালাচাঁদ স্কুলে(Ariadaha Kalachand School) ৭ জন ছাত্রের মাথার চুল(Hair) কেটে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা(Head Mistress)। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার জেরে কিছুটা হলেও ভয় পেয়েছে পড়ুয়ারা(Students)। সরব হয়েছেন ওই ৭ পড়ুয়ার অভিভাবকেরাও। কিন্তু বেশির ভাগ অভিভাবকই এই ঘটনায় খুব খুশি। তাঁদের অভিমত স্কুলের বড় দিদিমণি ঠিক কাজই করেছেন। স্কুলে এই শাসনের প্রয়োজন আছে। কারন আজ যে পড়ুয়ারা স্কুল চলাকালীন সময়ে ক্লাসে শিস দিয়েছে তাঁদের শাসন করা না হলে তাঁরাই আগামিদিনে রাস্তাঘাটা মেয়েদের পোষাক ধরে টানাটানি করবে, শিস দেবে, ইভটিজিং দেবে। তখন সেই ঘটনার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জমা পড়বে। হয়তো গ্রেফতারও হবে। সেক্ষেত্রে হাজতবাসও হতে পারে। তার থেকে তো এটা ভাল এখন থেকেই তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া তাঁরা ভুল করছে।
যদিও ঘটনায় ওই ৭জন পড়ুয়ার অভিভাবকেরা ভিন্ন কারনে সরব হয়েছেন যা এই ঘটনার বিতর্কে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। ওই ৭জন পড়ুয়ার অভিভাবকের দাবি, কোনও প্রমাণ ছাড়াই ওই ৭জনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কে শিস দিয়েছে তা বার হয়নি, অথচ বিনা অপরাধে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ওই ৭জনের মাথার চুলে কাঁচি চালিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। জানা গিয়েছে, দক্ষিণেশ্বরের আড়িয়াদহ কালাচাঁদ স্কুলে বৃহস্পতবার নবম শ্রেণিতে ভৌতবিজ্ঞানের ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিস দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেইসময় ওই ক্লাসের যিনি শিক্ষিকা ছিলেন, তিনি জানতে চান কোন ছাত্র এই আওয়াজ করে? কোনও সুনির্দিষ্ট উত্তর না পেয়ে, শুধুমাত্র সন্দেহবশত ৭ জন ছাত্রকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী মজুমদারের ঘরে নিয়ে যান ওই শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী মজুমদারও জানতে চান যে, কোন ছাত্র ক্লাসে শিষ দিয়েছে? তারপরই সন্দেহের বশে ওই ৭ জন ছাত্রের মাথার চুল প্রধান শিক্ষিকা নিজে হাতে কাঁচি দিয়ে কেটে দেন।
ঘটনাটি নিয়ে সরব হওয়া ওই ৭ পড়ুয়ার অভিভাবকদের দাবি, ক্লাসে শিস দেওয়া নিঃসন্দেহে গুরুতর অপরাধ। কিন্তু কে ওই কাজ করেছে, তা না জেরেই শুধু সন্দেহের বশে এহেন শাস্তি দেওয়া হল কেন? ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেওয়া কি কখনও শাস্তি হতে পারে? ঘটনার জেরে দক্ষিণেশ্বরের আড়িয়াদহ কালাচাঁদ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী মজুমদার অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। অভিভাবকদের স্পষ্ট দাবি, এই ধরনের শাস্তি তারা কোনওভাবে মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই তাঁরা প্রধান শিক্ষিকার শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।