নিজস্ব প্রতিনিধি: সোমবার থেকে শুরু হয়েছে রাজ্য বিধানসভায়(State Legislative Assembly) বাজেট অধিবেশন। সেই অধিবেশন শুরুর দিনেই বিজেপি(BJP) বিধায়কদের বিক্ষোভের জেরে কার্যত পন্ড হয়ে যায় রাজ্যপালের বাজেট ভাষণ। সেই ঘটনা প্রসঙ্গে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh) দাবি করলেন ‘বিধানসভায় যা হয়েছে একেবারে ঠিক হয়েছে।’ দিলীপের এই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক বেঁধেছে। এমনকি বঙ্গ বিজেপির অনেক নেতাই মনে করছেন বিজেপির বিধায়কেরা রাজ্যপালকে ভাষণ পড়তে বাধা দিয়ে ঠিক কাজ করেননি। এই অবস্থায় দিলীপের দাবি কার্যত আগুনে ঘি ঢালার সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দিলীপের সেই দাবির জেরে তৃণমূলের(TMC) তরফে কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh) একহাত নিয়েছেন দিলীপকে।
মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াক করতে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ জানান, ‘বিধানসভায় যা হয়েছে ঠিক হয়েছে। যারা সংসদে রুল বুক ছেঁড়েন, এখন তাঁরা গণতন্ত্র শেখাতে এসেছেন। বাংলায় বিরোধিদের কোথাও কথা বলার অধিকার নেই। সেই কারণেই বিধানসভায় বলা হয়েছে।বাংলার সমাজে মহিলারা সম্মান পান না। বাংলায় মহিলারা অত্যাচারিত হলে থানায় অভিযোগ নেওয়া হয় না। এখানে এই ঘটনা সব থেকে বেশি হয়। ’
দিলীপের এই বক্তব্যের জেরেই কুণাল পাল্টা জানিয়েছেন, ‘দিলীপবাবুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এত কম যে উনি অনেক কিছুই জানেন না। যখন কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় ছিল, বিজেপি ছিল বিরোধী আসনে। তখন ওয়েলে নেমে বিশৃঙ্খলা প্রচুর হয়েছে। সেই সময় দিলীপবাবু হাফ প্যান্ট পরে আরএসএস করতেন, তাই উনি সেসব জানেন না। আগেও বিধানসভায়, সংসদে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে তার একটা সীমা ছিল। যখন রাজ্যপাল ভাষণ পড়তেন তখন বিক্ষোভ হলেও তা কিছুক্ষণের মধ্যেই মিটে যেত। গতকাল যা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা নিজের ওয়ার্ডে হেরেছে, এখন নজর ঘুরিয়ে দিতে এসব করছে। রাজ্যপাল বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। বিজেপি-র বিধায়করা এবং রাজ্যপাল যোগসাজশ করে এটা করেছেন। পরিকল্পনা ছিল, বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাবেন আর রাজ্যপাল বক্তৃতা না দিয়েই চলে যাবেন। সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। যারা রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে, তারাই এমন করে। তৃণমূল বিধায়করা জোড়হাত করে রাজ্যপালকে সৌজন্য দেখিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেছেন। আসলে বিজেপি-র কিছু করার ক্ষমতা নেই, তাই এই সব করছে। তবে এই ভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার বিজেপি-র পরিকল্পনা সফল হয়নি। আর বাংলায় নারী সুরক্ষা নিয়ে উনি যা বলেছেন তা চূড়ান্ত হাস্যকর। দিলীপবাবুর নিশ্চয়ই মনে আছে, বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী, সুজাতা মণ্ডল যখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, সেই সময় সৌমিত্র প্রকাশ্যে সাংবাদিক বৈঠক করে সুজাতাকে বিবাহবিচ্ছেদের হুমকি দেন। যে যে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে, সেখানে নারী সুরক্ষা কী রকম, সেটা একবার উনি দেখুন। আর কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলায় নারীরা অনেক বেশি সুরক্ষিত, সেটাও সম্ভবত উনি জানেন না।’