নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে(Draupadi Murmu) কদর্য ভাবে আক্রমণ শানিয়েছেন বাংলার কারামন্ত্রী অখিল গিরি(Akhil Giri)। তার জেরে গত ২-৩ দিন ধরেই বাংলার রাজনীতি রীতিমত উত্তাল হয়ে উঠেছে। রাজ্যজুড়ে জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি(BJP)। চলছে অবরোধ। কোথাও কোথাও গিরির কুশপুত্তলিকা দাহও করা হচ্ছে। রাজ্যের পাশাপাশি ভিন রাজ্যের একাধিক জেলায় গিরির নামে থানায় অভিযোগও জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। হয়েছে এফআইআর। সেই সঙ্গে তাঁকে এখনই রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার ও বিধায়ক পদ কেড়ে নেওয়া ছাড়াও গ্রেফতারির দাবি তুলেছে বিজেপি। এই অবস্থার মধ্যে তৃণমূল(TMC) প্রায় সব নেতানেত্রী গিরির মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। তৃণমূলও দলগত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে তাঁরা গিরির মন্তব্যের কোনও দায়ভার নেবে না। তাঁরা এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করছেন। কিন্তু গোটা ঘটনা নিয়ে এখনও নীরব তৃণমূলসুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক সরকারি অনুষ্ঠানেও এই নিয়ে তিনি একটি শব্দও খরচ করলেন না।
আরও পড়ুন ডিসেম্বর থেকেই পে-স্লিপ বাধ্যতামূলক বঙ্গে, সিদ্ধান্ত রাজ্যের
রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলির দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের হাতে এদিন ট্যাব তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই ভেবেছিলেন এই অনুষ্ঠানে অখিলের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি তা করেননি। তবে ইঙ্গিতে জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে। তবে ঠিক কাকে লক্ষ্য করে তিনি এই কথা বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। এদিনের অনুষ্ঠানের পরে এখন যাবতীয় নজর আরও বড় করে পড়তে চলেছে আগামিকালের এক অনুষ্ঠানে। আগামিকাল বীরসা মুণ্ডার জন্মদিন। সেই উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ীতে। যেহেতু গিরির মন্তব্যে আদিবাসী সমাজ ক্ষুব্ধ তাই অনেকেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী সেই অনুষ্ঠান থেকেই গিরির মন্তব্য নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। যা জানাবার তা সেখানেই তিনি জানাবেন। এই অবস্থায় এই অনুষ্ঠানের দিকেই এখন সকলের নজর গিয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন বিধায়কদেরও এবার পঞ্চায়েতে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল
মুখ্যমন্ত্রী অখিলকাণ্ডে এখনও মুখ না খুললেও ইতিমধ্যেই অখিলের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীর দাবি, অখিল গিরিকে অবিলম্বে মন্ত্রিত্ব থেকে সরাতে হবে। এছাড়া তাঁকে গ্রেফতারির নির্দেশ দিক আদালত। পাশাপাশি তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের ও দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছেন। সেই মামলা দায়ের করার অনুমতি ইতিমধ্যেই দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও এদিন মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিতে কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন, দল তাঁকে শুধরে নেওয়ার সুযোগ দেবে। তবে আইন আইনের পথেই চলবে।