নিজস্ব প্রতিনিধি: দিনটা হওয়ার কথা ছিল একদম অন্যরকম। সেজেগুজে জামাইবাবাজি যাবেন শ্বশুরবাড়ি, সঙ্গে অবশ্যই বউ। সেখানে শাশুড়ির কাছে আশির্বাদ নিয়ে, তাঁর কাছ থেকে উপহার নিয়ে ভুরিভোজ সাঁটাবেন জামাই। কিন্তু হল ঠিক তার উল্টো। জামাইয়ের বিরুদ্ধে জামাইষষ্ঠীর(Jamaisashthi) দিনেই পুলিশের(Police) দ্বারস্থ হলেন তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্ত্রী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে খাস কলকাতায়(Kolkata) হরিদেবপুর(Haridevpur) এলাকায়। কার্যত মূল অভিযোগ জামাইষষ্ঠীর দিনেই শাশুড়িকে ধরে পিটিয়েছেন জামাই। তাও যে সে জামাই নন, আইবি ডিপার্টমেন্টে চাকরি করা সেই জামাইবাবাজি রীতিমত এএসআই(ASI) পদে কর্মরত। এই বিষয়ে হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্তেও নেমেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বছরচারেক আগে হরিদেবপুর থানা এলাকার কবরডাঙার রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা লাবণী গোস্বামীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল এএসআই সঞ্জীব গোস্বামীর। সঞ্জীব আইবি ডিপার্টমেন্টে লর্ড সিনহা রোড অফিসে কর্মরত। কিন্তু রবিবার সকালে জামাইষষ্ঠীর দিনই সঞ্জীব শ্বশুরবাড়ি গিয়ে পিটিয়ে আসেন শাশুড়ি ঊষা অধিকারীকে। সেই সময় বাধা দিতে গিয়ে মার খান শ্বশুর খোকন অধিকারীও। সেই সময় বাপের বাড়িতেই ছিলেন লাবণী। তিনিও বাবা-মাকে বাঁচাতে এসে মার খান স্বামীর হাতে। এরপরেই এদিন সকালে সঞ্জীবের বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন খোকন ও ঊষা অধিকারী। তবে হরিদেবপুর থানায় যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেখানে একা সঞ্জীবের নাম নেই। সঞ্জীবের বাবা, মা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খোকন-ঊষার অভিযোগ, জামাই-সহ ওই চারজনই এদিন হামলা চালান তাঁদের বাড়িতে। যদিও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সঞ্জীব ছাড়া আর কাউকে দেখেননি।
এদিন সঞ্জীবের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন লাবণী। তিনি জানিয়েছেন, বিয়ের সময়ে সঞ্জীব যৌতুক হিসাবে আসবাবপত্র, সোনার গয়না-সহ নগদ ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তবে আরও টাকা দাবি করে সঞ্জীব মাঝেমধ্যেই অশান্তি করতেন। শুধু তাই নয়, সার্ভিস রিভলভার নিয়ে গুলি করে মারার হুমকিও নাকি তিনি দিতেন তাঁকে। এম নকি টাকা না দিলে খোকন-ঊষাকেও খুন করার হুমকি দিতেন। বিয়ের পর বিভিন্ন বিষয় নিয়েই যখন-তখন অশান্তি করত সঞ্জীব। মারধরও করতেন লাবণীকে। এতদিন মুখ চুপ করে সব মেনে নিলেও এদিন নিজের চোখের সামনে বাবা-মাকে আক্রান্ত হতে দেখে য়ার চুপ থাকতে পারেননি লাবণী। বাবা-মাকে বুঝিয়ে সোজা তাঁদের নিয়ে হাজির হন হরিদেবপুর থানায়।