নিজস্ব প্রতিনিধি: গঙ্গা দূষণ(Ganga Pollution) নিয়ে এবার কড়া অবস্থান নিল জাতীয় পরিবেশ আদালত বা National Green Tribunal। গঙ্গার জল কোথায় কী ভাবে দূষিত হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে দেশের পরিবেশ আদালত একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। সেই দল বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরিবেশ আদালতকে রিপোর্ট জমা দেবে। সেখানে তাঁরা উল্লেখ করবে কারা কী ভাবে গঙ্গাকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে চলেছে। তবে এই দূষণের বিষয়টি গঙ্গার সামগ্রিক গতিপথের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। শুধুমাত্র বাংলার বুকে শহর কলকাতা(Kolkata) ও হাওড়া(Howrah) জেলার যে অংশে গঙ্গা প্রবাহিত হয়েছে সেই অংশেরই দূষণ খতিয়ে দেখা হবে। আর তাই হাওড়ার জেলাশাসককেও এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যারা এই মামলায় মূল পার্টি, নোটিস পাঠিয়ে তাঁদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের হলফনামা তলব করেছে পরিবেশ আদালত। পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চের বিচারপতি বি অমিত স্থালেকর এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য সত্যগোপাল কোরলাপতি এই নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের নির্দেশ – তদন্তকারী দলে রাজ্য এবং কেন্দ্রের দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির একজন করে সিনিয়র বিজ্ঞানীকে রাখতে হবে। একউ সঙ্গে সেই দলে রাখতে হবে National Mission for Clean Ganga Authority’র এক সিনিয়র বিজ্ঞানীকে। এছাড়াও কলকাতা এবং হাওড়া পুরনিগমের একজন করে সিনিয়র অফিসার থাকবেন। থাকবেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের একজন সিনিয়র অফিসার। নিজেদের হলফনামার সঙ্গে দলের রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কমিটির সদস্যদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবেন হাওড়ার জেলাশাসক। উল্লেখ্য, গঙ্গাদূষণ নিয়ে মামলাটি করেছিলেন রাজ্যের পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত(Subhash Dutta)। তিনি গঙ্গার বিভিন্ন ঘাট ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি নিজের তোলা ছবির সাহায্যে দেখান দূষণ হচ্ছে কী ভাবে। তথ্য-সহই মামলা করেন সুভাষ।
সেখানে বলা হয়, রানি রাসমণি ঘাট, নিমতলা ঘাট, বাগবাজার ঘাট, কাশীমিত্র ঘাট, শোভাবাজার ঘাট, মল্লিক ঘাট-সহ হাওড়া এবং কলকাতায় বেশ কিছু ঐতিহাসিক ঘাটের ধারে ডাঁই করা রয়েছে বর্জ্য। যা মিশছে নদীর জলে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে খোলা নর্দমা দিয়েও দূষিত জল মিশছে গঙ্গায়। পুরসভার পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন শিল্পের তরল বর্জ্যও। সুপ্রিম-নির্দেশে এই তরল বর্জ্যকে ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পরিশোধন করে গঙ্গায় ফেলার কথা। কিন্তু সে দিক থেকে সবচেয়ে বড় অব্যবস্থার নজির মিলেছে হাওড়ায়। শিবপুরের বিচালি ঘাটের পাড়ে স্বর্ণশিল্পের বেশ কিছু কারখানা আছে। সোনার গয়নার কাজে প্রচুর অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। সেই অ্যাসিড জলও মেশে নদীতে। আবার, শিবপুরের টোপিওয়ালা ঘাটে ফি সকালে ডিটারজেন্ট এবং সোডা ব্যবহার করে চলে কাপড় কাচা। যার জেরেও দূষিত হচ্ছে গঙ্গা। এ বাদে পোশাক ডাই করার কাজে ব্যবহৃত রাসায়নিকও পড়ে গঙ্গার জলে।