নিজস্ব প্রতিনিধি: দিন দুই আগেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এবার সম্ভবত আরও এক লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। কেননা মনে করা হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীর(Shishir Adhikari) সাংসদ পদ খারিজ হতে চলেছে। এহেন মনে করার কারণ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Sudip Banerjee) তলব করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা(Om Birla)। সুদীপবাবুকে আগামী ২৬ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সাক্ষাতের জন্য সাংসদ ভবনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে ডেকে পাঠিয়েছেন স্পিকার ওম বিড়লা। শিশির অধিকারী বিজেপি(BJP) যোগ দিয়েছেন, তাই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করা হোক, এই মর্মেই তৃণমূল(TMC) আবেদন জানিয়েছিল স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। শিশিরবাবুর সাংসদ পদ থাকবে কী থাকবে না সেই বিষয়টি অবশ্য এখনও সাংসদের প্রিভিলেজ এবং এথিক্স কমিটিতে বিবেচনাধীন রয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার সঙ্গে সঙ্গেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে সঙ্গে দলের একাধিক পদ থেকে অধিকারী পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যায়। সেই তালিকায় নাম ছিল শিশির অধিকারী, তাঁর ছেলে তথা সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী ও শিশিরবাবুর অপর ছেলে সৌমেন্দ্যু অধিকারীর। তার জেরে কার্যত গোটা অধিকারী পরিবারই তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের বিরোধিতা শুরু করে। কথায় কথায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে কার্যতা শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত স্তরে সেই আক্রমণ শানানো হয়। একই সঙ্গে ২০২১ সালের ১ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরায় প্রচারে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভাতে হাজির হয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন শিশিরবাবু। সেই বক্তৃতায় বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। একুশের ভোতে জেতার পরেই তাই তৃণমূলের তরফে শিশিরবাবুর সাংসদ পদ খারিজের জন্য আবেদন জানানো হয় স্পিকার ওম বিড়লার কাছে।
বর্তমানে শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের আবেদনের বিষয়টি লোকসভার প্রিভিলেজ এবং এথিক্স কমিটিতে বিবেচনাধীন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার লোকসভার স্পিকারের কাছে তদ্বিরও করেছে তৃণমূলের সংসদীয় দল। তার জেরেই এবার মনে করা হচ্ছে ওম বিড়লা তলব করেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও ভিন্ন একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশিরবাবুর বিষয়টি নিয়ে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়েছে সুদীপবাবুকে। একই সঙ্গে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশিরবাবুর সাংসদ পদের বিষয়টি নিয়ে বিজেপি বেশি ঝুলিয়ে রাখতে চাইছে না। সেক্ষেত্রে চলতি বছরেই শিশিরবাবুর সাংসদ পদ খারিজ সম্পর্কিত বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে যেতে পারে। এমনকি সেক্ষেত্রে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনও হয়ে যেতে পারে চলতি বছরে।