নিজস্ব প্রতিনিধি: একবার নয়, একাধিকবার। কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের(Justice Abhijit Gangopadhay) দেওয়া রায়ের ওপর আবারও স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)। এবার স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক স্কুলে পোস্টিংয়ের(Primary School Posting Case) মামলায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মামলায় সিবিআই(CBI) তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে সিবিআই ৩৪৪ জন প্রাথমিক শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সিবিআইয়ের কাছ থেকে এই তদন্ত সংক্রান্ত রিপোর্টও চেয়েছিলেন বিচারপতি। সেই মামলাতেই এদিন সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন যাদবপুরে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য
পোস্টিং বিতর্ক মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। তাদের যুক্তি ছিল, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এমনিতেই তদন্ত করছে সিবিআই। তবে নতুন করে পোস্টিংয়ের মামলায় সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনীতা কী? সোমবার এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এএস বোপান্না এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত রাখা হচ্ছে। মামলাটিতে মূল মামলাকারীদের আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। তাই আদালত রাজ্যকে জানিয়েছে, এ বিষয়ে মূল মামলাকারীদের নোটিস দিতে হবে। পোস্টিংয়ের মামলায় এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা নিয়োগ মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিয়ো রেকর্ড আদালতে পেশ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান মানিক। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাঁর ভিডিয়ো ফুটেজ পেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। এর পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে সিবিআই।
আরও পড়ুন দুবাইয়ে আটকে নদিয়ার ১৩ শ্রমিক, বাড়ি ফেরানোর আর্জি
উল্লেখ্য, সেই নির্দেশের ভিত্তিতে সোমবারেই হুগলির ৩০ জন প্রাথমিক শিক্ষককে নিজাম প্যালেসে তলব করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। পোস্টিং মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সিবিআইয়ের সেই তলবের ভবিষ্যত কী, তা অবশ্য এখনই স্পষ্ট নয়। মেধাতালিকায় ভাল র্যাঙ্ক করেও শূন্যপদ না থাকায় কাছাকাছি জায়গার স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিতে পারেননি অনেকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআইয়ের হাতে উঠে আসে অন্য তথ্য। তাতে বলা হয়, অনেকেই মেধাতালিকার পিছন দিকে থেকেও স্রেফ টাকা দিয়ে পছন্দমতো স্কুলে পোস্টিং নিয়েছেন। এই মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নাম জড়ায়। তাঁকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে জানায়, এই মামলায় মানিক ভট্টাচার্য পার্টিই নন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ? এই মামলা থেকে তাঁকে বাদ রাখতে হবে।