নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারের আমলেই পশ্চিমবঙ্গ(West Bengal) বিদ্যুৎ উৎপাদনে(Power Generation) সম্পূর্ণ ভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকারকে এখন আর বিদ্যুতের জন্য কেন্দ্র সরকার বা ভিন্ন রাজ্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না। কার্যত তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ ও সৌরবিদ্যুতের হাত ধরেই রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। কিন্তু পরিবেশ দূষণে ঠেকাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে আর নতুন করে কোনও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার পক্ষপাতী নয়। বরঞ্চ রাজ্য সরকার চাইছে জলবিদ্যুৎ(Hydropower) ও অপ্রচলিত শক্তির উৎপাদন ও তার ব্যবহার বাড়ুক। সেই লক্ষ্যেই এদিন অর্থাৎ বুধবার সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন বা 7th Bengal Global Business Summit’র মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে MOU সাক্ষর করল Damodar Valley Corporation বা DVC এবং West Bengal State Electricity Distribution Company Limited বা WBSEDCL।
জানা গিয়েছে, DVC’র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এবার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সেই বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকছে রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা WBSEDCL। বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তে পাঞ্চেতে এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে উঠবে। বাংলার বুকে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের ওপর বাম জমানায় যে Pump Storage Project গড়ে উঠেছিল, সেই ধাঁচেই নয়া প্রকল্প গড়ে উঠবে পাঞ্চেতে। এই প্রকল্পের সব থেকে বড় সুবিধা হল, বৃহৎ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মতো না লাগে জায়গা না লাগে পুঁজি। পাহাড়ের ওপরে ও নীচে দুটি জলাশয় গড়েই এই প্রকল্পের মাধ্যমে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঞ্চেতের বুকে যে প্রকল্প গড়ে তোলার জন্য এদিন মউ সাক্ষর হয়েছে তাতে দৈনিক ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রাখ হয়েছে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ DVC ও WBSEDCL’র মধ্যে ভাগ হবে। DVC এই বিদ্যুৎ ঝাড়খণ্ডে বিক্রি করবে এবং WBSEDCL দক্ষিণবঙ্গের গ্রামে গ্রামে এই বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে।
দামোদরের বুকে পাঞ্চেতে আগে থেকেই বড় জলাধার রয়েছে। খালি পাহাড়ের মাথায় জলবিদ্যুতের উৎপাদনের কেন্দ্রটি তৈরি করতে হবে এবং একটি জলাধার নির্মাণ করতে হবে। গরমকালে বা উৎসবের মরশুমে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লে মূল জলাধার থেকে জল ওপরের উৎপাদন কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজন মতো বিদ্যুৎ তৈরি করা যাবে। আবার দরকার মতো অন্য সময় জল জমিয়ে রাখা যাবে। প্রয়োজনে ফেরত পাঠানো যাবে মূল জলাধারে। এর ফলে গরম কালে যে অতিরিক্ত বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হয়, তার সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে জলেরও অপচয় হবে না। এই ধরনের প্রকল্প আগেই পুরুলিয়ার বুকে গড়ে উঠেছে। এবং তা সাফল্যের সঙ্গে চলছে। পাঞ্চেতে এখন DVC’র ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি ইউনিট রয়েছে। এবার সেখানে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন গড়ে উঠতে চলেছে।