নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বড়দিন বা ক্রিসমাস। তবে বিভিন্ন দেশে বড়দিন উৎসব পালনের ক্ষেত্রে রয়েছে নানা রীতি। প্রথমদিন ক্রিসমাস ছিল খ্রিষ্টীয় ধর্মালম্বীদের নিজস্ব ছুটির দিন। পরে যখন সারা পৃথিবীতে এই রীতি ছড়িয়ে পড়ে, বিভিন্ন দেশের আদবকায়দাও একে একে মিশে যায় বড়দিন পালনের ক্ষেত্রে। এর ফলেই এখন বিভিন্ন দেশে হরেকরকম প্রথায় পালিত হয় বড়দিন। এর মধ্যে বেশিরভাগ রীতি মজার হলেও আবার অনেক রীতি রয়েছে অদ্ভুত রকমের। জেনে নিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বড়দিন বা ক্রিসমাস পালনের রীতি।
১. অস্ট্রিয়াঃ অস্ট্রিয়ার বড়দিন পালন একদমই ভিন্ন। এই সময় বহু মানুষ ভুত বা শয়তানের প্রতীক সেজে বাচ্চাদের ভয় দেখায়। এছাড়াও এদিন ভিয়েনা শহরে ক্র্যাম্পস প্যারেড হয়।
২. স্পেনঃ স্পেনে ক্রিসমাস উদযাপনে ব্যবহৃত হয় কাঠের গুঁড়ি সাজিয়ে। এটা পাওয়া যায় স্পেনের কাতালানিয়া প্রদেশে। এটিকে বলা হয় টিও দে নাদাল। তাতে কাঠির হাত-পা, মুখে একটা হাসি এবং মাথায় একটা লাল টুপি পরানো হয়। ৮ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর বাচ্চারা এই ফাঁপা গুঁড়ির ভেতর জল এবং খাবার দেয়। রাতে গরম রাখার জন্য কম্বলে মুড়ে দেওয়া হয় এই কাঠের গুঁড়িগুলোকে।
৩. ইউক্রেনঃ ইউক্রেনে মাকড়সার জালের মত সাজানো হয় ঘর। পুরাণ মতে, এক গরিব বিধবা টাকার অভাবে তার সন্তানদের জন্য ক্রিসমাস ট্রি সাজাতে পারেনি। তার দুঃখ দেখে মাকড়সারা নিজেদের জাল বুনে সেই গাছ খুব সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে। বাচ্চারা পরদিন সকালে সেই মাকড়সার জালের সাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। ইউক্রেনের সংস্কৃতিতেও মাকড়সার জালকে পবিত্র এবং শুভ মনে করা হয়।
৪. পর্তুগালঃ ক্রিসমাসে পর্তুগালে ডিনার টেবিলে অতিরিক্ত প্লেট খাবার সমেত রাখা হয়। পর্তুগালবাসী বিশ্বাস করেন, মৃত প্রিয়জনেরা এই দিন তাঁদের সাথে একসঙ্গে ডিনার করেন।
৫. নরওয়েঃ প্রচলিত পুরাণ মতে নরওয়েতে ক্রিসমাসের সন্ধ্যেয় ডাইনিরা আকাশে উরে বেড়ায় ঝাঁটায় চেপে। তাই ক্রিসমাসের আগের দিন নরওয়েবাসীরা ঝাঁটা লুকিয়ে রাখে যাতে ডাইনিরা তাদের প্রিয় বাহন খুঁজে না পায়।
৬. সাউথ আফ্রিকাঃ ক্রিসমাস মানেই এলাহী আয়োজন। তবে সাউথ আফ্রিকায় ক্রিসমাসের সবথেকে জনপ্রিয় খাদ্য হল শুঁয়োপোকা ভাজা। এটাই সম্ভবত পৃথিবীতে সবথেকে অদ্ভুতুড়ে ক্রিসমাস স্পেশাল খাবার। তবে এটা সাধারণ শুঁয়োপোকা নয়। এইক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় পাইন ট্রি এম্পেরার মথ অথবা ক্রিসমাস ক্যাটারপিলার। বিশ্বাস করা হয় এর স্বাদ আগামী বছরের ভালো সময়ের প্রতীক।
৭. নেদারল্যান্ডসঃ এখানে আগুনের পাশে জুতো রাখার প্রচলন রয়েছে। নেদারল্যান্ডসে শিশুরা ডিসেম্বরের ৫ তারিখ থেকেই বাড়ির ফায়ারপ্লেসের পাশে জুতো রেখে দেয় এই আশায় যে, স্যান্টাক্লজ এসে সেই জুতোয় উপহারে ভরে দেবেন।