এই মুহূর্তে




আজও মায়ের ভোগে পোড়া রুটি- পান্তা ? জেনে নিন দু’শো বছর আগে বাগদি পরিবারের কাহিনী !




নিজস্ব প্রতিনিধি : আর তো ক’টা দিন মাত্র। এরপরেই কৈলাস থেকে সোজা মর্ত্যে আসবে উমা, সঙ্গে আসবে ছেলেমেয়েরাও। দুর্গা পুজো এলেই মনটা কেমন কেমন করে। বাঙালির প্রাণের উৎসব এই দুর্গা পুজো। তবে পুজোর কথা উঠলেই উঠে আসে বনেদি বাড়ির কথা। যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য মেনে চলে আসছে এই পুজো। বর্তমানে এর জৌলুস কমলেও আজও অতীতের ধারা অক্ষুণ রেখেছে। তেমনই প্রত্যেক বছর মাতৃ আরাধনায় মেতে ওঠে বাগদি পরিবার। ২০০ বছর পার হতে চলল এখনও নিয়ম-রীতি মেনে মায়ের পুজো হয়। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল মায়ের ভোগে দেওয়া হয় পোড়া রুটি ও পান্তা ভাত। এভাবেই পুজিত হন মহিষাসুরমর্দিনী।

আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে দেবীর নির্দেশেই বাগদি পরিবারে পুজো শুরু হয়েছিল। সেসময় বাগদি পরিবারে ছিল অভাবের সংসার। পর্ণকুটিরে শুরু হয়েছিল দুর্গার আরাধনা। এই নিয়ে এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে বাগদি পরিবারে।   

একসময় বাগদি পরিবারে সেসময় চলছিল ঘোর অভাব অনটন। তাই পরিবারের অসহায়তার কথা জেনে দেবী নিজেই নির্দেশ দিয়েছিলেন বাড়ির সাধারণ খাবার দিয়েই ভোগ নিবেদনের। তখন বাড়িতে পান্তা ভাত আর পোড়া রুটিও জুটত। আর তা আনন্দ করে খেত সকলে। দেবীর এমন নির্দেশের পর আজও পোড়া রুটি ও পান্তা ভাতে পুজিত হন রাউৎখন্ড বাগদী পাড়ার চতুর্ভূজা দেবী দুর্গা।

আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে বাঁকুড়া জেলার জয়পুর থানার রাউৎখন্ড ছিল তৎকালীন বর্ধমান রাজা মাহাতব চাঁদের অধীনে।  রাজামশাই বাগদী পরিবারের পদবী দিয়েছিলেন আটপৌরি। সেই থেকে ওই গ্রামের নাম হয়েছিল আটপৌরি পাড়া। বর্তমানে এটি বাগদীপাড়া নামে পরিচিত।

কীভাবে পুজোর প্রচলন শুরু হয়েছিল :  একদা এক আশ্বিনে ওই বাগদী পরিবারের কর্তা গ্রামের অদূরে এক জলাশয়ে মাছ ধরতে যান। কিন্তু কিছুতেই তাঁর মাছ ধরার জাল একা সামলাতে পারছিলেন না। ঠিক তখনই এক সুন্দর অপরূপা রমণী আসেন, এবং সাহায্যের প্রস্তাব দেন। বাগদী পরিবারের ওই কর্তা আগন্তুক রমণীকে জিজ্ঞাসা করেন ‘তুমি কে মা’? উত্তরে ঐ রমণী জানিয়েছিলেন সে বাগদী পরিবারেরই কন্যা।

মাছ ধরা শেষ হলে ওই বাগদী পরিবারের কর্তার সঙ্গে বাড়িও আসতে চান ওই রমণী। বাগদী পরিবারের ওই কর্তা প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজী হয়ে যান তাঁকে বাড়ি আনতে ।এরপর দুজনে গল্প করতে করতে গ্রামের দিকে রওনা হন। গ্রামের কাছাকাছি পৌঁছে আর ওই রমনীর গলা শুনতে পাননি বাগদী পরিবারের কর্তা। পিছনে ফিরে দেখেন ওই রমণী আর নেই।

এরপর বাড়ি ফিরে আসেন বাগদী পরিবারের কর্তা। ওই রাতেই দেবী স্বপ্নে চতুর্ভূজা বৈষ্ণবী রূপে দেখা দেন বাগদি পরিবারের কর্তাকে। মা দুর্গা তাঁকে বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করার নির্দেশ দেন। বাগদি পরিবারের কর্তা মাকে অসহায়তার কথা জানালে দেবী নির্দেশ দেন প্রতিদিন বাড়িতে যে আহার হয় তা দিয়েই ভোগ দিতে। এই শুনে খুশি হয়ে যান বাগদি পরিবারের এই কর্তা। সেই থেকে চলে আসছে মায়ের পুজো। পান্তা ভাত আর পোড়া রুটি দেওয়া হয় ভোগে।

সময় চলে গিয়েছে। কত যুগ পার হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে বদলেছে অনেক কিছুই। শুধু বদলায় নি পুজোর রীতিনীতি। ২০০ বছর পেরিয়ে গিয়েও আজও একই পরম্পরা এবং ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রাউৎখন্ডের বাগদি পরিবার। আজও দেবী চতুর্ভূজা রুপে এখানে পুজিত হন। ভোগে থাকে সেই পান্তা ভাত আর পোড়া রুটি। কিন্তু দেবী যে তাতেই খুশি।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

বারাসতের দক্ষিণপাড়ায় ৪৫৪ বছরের শিবের কোঠার দুর্গাপুজো সংকল্পিত হয় যোধাবাঈয়ের নামে

পুজো মানেই ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক আর শাড়ি: মধুমিতা সরকার

গাজায় ইজরায়েলের হত্যালিলার প্রতিবাদে ওয়াশিংটনের রাস্তায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ফিলিস্তিনি যুবকের

একই বৃন্তে দুইটি কুসুম, বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে নামাজ পড়া মুসলিমের মাথায় ছাতা ধরল হিন্দু পুলিশ কর্মী

বিয়ে হয়েছিল 57 বছর আগে, ভিডিও হাতে পেলেন 2024-এ

পুলিশকে দেখে খালে ঝাঁপ, ৩ ঘন্টার চেষ্টায় কচুরিপানার ভেতর থেকে আটক ধর্ষণের আসামি

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর