নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: প্রেম যে কোনও ভাষা-বর্ণ-ধর্ম আর ভৌগলিক গণ্ডির বাঁধা মানে না ফের একবার প্রমাণিত হলো। ভালবাসার মানুষের টানে সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সুদূর জার্মানি থেকে গোপালগঞ্জে হাজির হলেন জার্মান তরুণী জেনিফার স্ট্রায়ার্স। সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জ আদালতে মনের মানুষ চয়ন ইসলামের সঙ্গে আইন মেনে নতুন ইনিংস শুরু করলেন।
পাঁচ বছর আগে ভাষা শিক্ষার কোর্স করতে জার্মানি গিয়েছিলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরার বাসিন্দা চয়ন ইসলাম। জার্মানিতে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় বাইলেফেল্ড স্টেটের বাসিন্দা জেনিফার স্ট্রায়ার্সের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। গত বছরের ১০ মার্চ কোর্স শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসেন চয়ন। তবে চোখের আড়াল হলেও মনের আড়াল হয়নি যুগলের। সম্প্রতি জেনিফার বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ছেলের প্রেমকে পরিপূর্ণতা দিতে তা মেনে নেন চয়নের বাবা রবিউল ইসলাম ও মা ঝর্ণা বেগম। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জার্মানি থেকে বাংলাদেশে আসেন জেনিফার।
ভিন দেশের ভিন ধর্মের এক যুবককে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য কোনও আপশোষ নেই জেনিফারের। বরং গত কয়েকদিন শ্বশুর-শাশুড়ি সহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে প্রাণ উজাড় করে দেওয়া ভালবাসা পেয়ে খুশি সে। ভাঙা বাংলায় বললেন, ‘এভাবে যে আমাকে চয়নের আত্মীয়রা কাছে টেনে নেবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। শ্বশুরবাড়ির এত ভালবাসার কথা বাবা-মাকে জানিয়েছি। তারা খুব খুশি।’ মেম বৌমা পেয়ে খুশি চয়নের মা ঝর্ণা বেগমও। এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিদেশি পুত্রবধূকে পেয়ে আমরা খুশি। অল্প সময়ের মধ্যে জেনিফার আমাদের খুবই আপন করে নিয়েছে। গরমে ওর একটু কষ্ট হচ্ছে। তবে কোনও অভিযোগ নেই তার। এমন মিষ্টি সদ্বভাবের বৌমা পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের বিষয়।’