নিসর্গ নির্যাস: চুয়াড় বিদ্রোহ বললেই উঠে আসে রানি শিরোমণি, কর্ণগড়ের নাম। ‘মেদিনীপুর’ পরগণার রানি ছিলেন শিরোমণি। রাজা অজিত সিংহের দ্বিতীয় স্ত্রী তিনি। পুত্রবধূ রাজা যশোবন্ত সিংহের। রাজপরিবারের মন্দির বললেই উঠে আসে দেবী মহামায়ার নাম। তবে ওড়িশা যোগ থাকায় রাজপরিবারে একসময় মূল মন্দির ছিল জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার। সেই বিগ্রহ আজও আছে ‘ক্ষয়প্রাপ্ত’ অবস্থায়। হয় না রথযাত্রা।
রানি শিরোমণি গড়ের সামনেই ছিল সেই জগন্নাথ মন্দির। উদাসীনতায় তা ভাঙতে ভাঙতে ‘লোপ’ পেয়েছে। টিকে আছে সামান্য জরাজীর্ণ স্তম্ভ। লতাপাতায় ঢেকে আছে এমন ভাবে, যা সহজে খালি চোখে দেখা যায় না।
প্রাচীন বিগ্রহ আছে কর্ণগড়ের ‘পণ্ডা’ পরিবারে। রাজপরিবারের মন্দিরে নিযুক্ত হওয়ার আগে পুরোহিতের আসল পদবী ছিল ‘চক্রবর্তী’। পরে তিনি উপাধি পান ‘পণ্ডা’। সেই উপাধিই এখন বংশপরম্পরায় পদবী।
উল্লেখ্য, মন্দিরে প্রাচীন এই বিগ্রহের পুজো করতেন অন্নদাচরণ পণ্ডা। আগে গড়ের সামনেই ছিল তাঁদের বাড়ি। পরবর্তীকালে ডাকাতের ভয়ে পুরোহিতের পরিবার চলে আসেন মহাময়া মন্দিরের কাছে। এখন সেখানেই বাসস্থান পুরোহিতের বংশধরদের। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জরাজীর্ণ মন্দির থেকে বাড়িতে বিগ্রহ নিয়ে এসেছিলেন গোপাল পণ্ডা। এখনও বাড়িতে আছে সেই ‘জরাজীর্ণ’ বিগ্রহ। পুজো হয় বাড়ির মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা নতুন বিগ্রহে। হয় নিত্যপুজো। তবে রথযাত্রা (RATHA YATRA) হয় না। প্রাচীন মূর্তি আছে বন্ধ ঘরে। স্থান হয়নি মিউজিয়ামেও। গড় মধ্যস্থিত ‘রাজ্য সংরক্ষিত স্তম্ভ’-ও এখন অনাদরে।