নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই দেশব্যাপী পালন করা হবে স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার সংগ্রামীদের অবদান অবিস্মরণীয়। কিন্তু, জানলে অবাক হবেন এমন অনেক সংগ্রামী আছেন, যাঁদের অবদান একেবারেই ভোলার নয়। অথচ, ইতিহাসের পাতায় তাঁরা একেবারে ব্রাত্য।
তেমনি এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথা বলব আজ। জানুন অন্য স্বাধীনতার গল্প। যাঁরা শুধু মরে কভু নাহি দেন প্রাণ, কেহ কভু তাঁহাদের রাখেনি সম্মান। এই একই ঘটনার সাক্ষী এই নীলমণি হাজরা। যিনি একবারে অবহেলিত সাধারণ মানুষের কাছে। প্রয়াত এই স্বাধীনতা সংগ্রামী ১৯৪২ সালের সেপ্টেম্বরে থানা দখল করার মতো আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৮১ তম বর্ষে দাঁড়িয়ে নীলমণি হাজরার নাম সম্পর্কে কেউ ওয়াকিবহাল নন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে তিনি কোনও সম্মান পাননি । বর্তমান প্রজন্ম তাঁকে চেনেন না বলে আক্ষেপের সুর তাঁর নাতনির গলায়। তাঁর আত্মকথা তুলে ধরার মত কেউ নেই।
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রথম শহীদ গুণধর হাজরার পরেই নীলমণি হাজরার নাম আসে। জানা গিয়েছে, মহিষাদল ব্লকের তাজপুরের বাসিন্দা নীলমণি হাজরা ও তাঁর স্ত্রী রুক্মিণী হাজরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের অনস্বীকার্য অবদান ভোলার নয়। কিন্তু সেই অর্থে সম্মান পাননি এমনই দাবি তাঁর পরিবারের।
নীলমণি হাজরার বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে তাঁর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। আজ সেই মূর্তিতে অযত্নের ছায়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। জমেছে আগাছা। প্রশাসনের সহযোগিতা দাবি করেছেন।
প্রত্যেক ১৫ অগাস্ট এলেই ঢাক ঢোল পিটিয়ে, তাঁর প্রতিকৃতিতে মালা দিতে আসেন অনেকেই। কিন্তু দু’বছর তাও বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি সহযোগিতার আশা করেছেন তাঁর পরিবার।
অন্যদিকে, মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক হরিপদ মাইতি জানিয়েছেন, ৪২ এর ভারতছাড়ো আন্দোলনে এবং সেপ্টেম্বরে থানা দখলে অন্যতম ভূমিকা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী নীলমণি হাজরার। জানা গিয়েছে, ১৯৪৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর গান্ধীজি যখন মহিষাদলের একতারপুরে এসেছিলেন। সেইসময় একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। তাঁর সভাপতি হয়েছিলেন এই নীলমণি বাবু।
বর্তমান সমাজের কাছে তাঁর অনস্বীকার্য আবদান তুলে ধরার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এমনকি, মহিষাদলের বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী আশ্বস্ত করেছেন, এই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীকে অবশ্যই সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হবে। এই বিষয়ে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন।