নিজস্ব প্রতিনিধি: আজকালকার দিনে ওয়েডিং ফটোগ্রাফার ছাড়া বিবাহ অনুষ্ঠান কার্যত অসম্ভব। ছেলে হোক কিংবা মেয়ে, বিয়ে প্রত্যেক মানুষের কাছেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মরণীয় একটি ঘটনা। আর এই বিয়ের প্রতিটি মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দি করাই কাজ ওয়েডিং ফটোগ্রাফারের। বিয়ের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান, বর বউয়ের সাক্ষাৎ, তাঁদের সাজসজ্জা, আত্মীয় স্বজনদের হৈ-হুল্লোড় এবং পরিশেষে পরিচিত পরিজনদের পাত পেড়ে খাওয়া দাওয়া, এই সমস্ত অনুষ্ঠানের মুহূর্তগুলিকে এক সুতোয় গেঁথে বর বউয়ের হাতে তুলে দিতেই হাজার হাজার টাকা খরচ করে ডেকে আনা হয় ওয়েডিং ফটোগ্রাফারদের।
কিন্তু বিবাহ অনুষ্ঠানে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন যারা, তাদের ভালো মন্দের কথা কিন্তু খুব একটা কেউই ভেবে দেখেন না। এমনকি তাঁরা সারাদিন কি খেলো বা আদৌ কিছু খাওয়া হল কিনা সেই নিয়েও মাথা ঘামান না অনেকেই। আর মূলত সেই কারণেই বেজায় চটেছেন এক ফটোগ্রাফার। তাঁর অভিযোগ সারাদিন ধরে খেটেখুটে বিয়ের সব ছবি তোলার পরেও তাঁকে খেতে দেওয়া হয়নি। আর তাতেই ক্ষেপে গিয়ে বিয়ের সমস্ত ছবি মুছে দিয়েছেন ওই ফটোগ্রাফার।
সম্প্রতি ফটোগ্রাফার নিজেই তাঁর এই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট লিখে জানান, ‘সম্প্রতি তিনি তাঁর বন্ধুর বিয়ের ছবি তুলতে গিয়েছিলেন। বিনিময়ে মাত্র ২৫০ ডলার দেওয়ার কথা বলেন তাঁর বন্ধু, যা ১০ ঘণ্টার বিবাহ অনুষ্ঠানে ছবি তোলার জন্য খুবই নগণ্য পারিশ্রমিক। কিন্তু তাতেও বন্ধুর কথা ফেলতে পারেননি ওই ফটোগ্রাফার। এরপর নির্দিষ্ট তিনি দিনে নির্দিষ্ট সময়ে বিবাহ স্থলে পৌঁছান। কিন্তু সকাল এগারোটা থেকে কাজ শুরু করার পর বিকেল পাঁচটা বেজে গেলেও তাকে কেউ কোনও খাবার দেননি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, জায়গাটি ছিল অবিশ্বাস্য গরম। ফলত ক্ষুধা-তৃষ্ণায় একপ্রকার পাগল হয়ে গিয়েছিলেন ওই ফটোগ্রাফার। কিন্তু বহুবার অনুরোধ সত্বেও তাঁকে তার বন্ধু কিংবা তাঁর বাড়ির লোক কেউই কোনও খাবার, এমনকি পানীয় জল পর্যন্ত দেননি। অগত্যা সহ্যের বাঁধ ভাঙ্গে তাঁর। ফলে বন্ধুর মুখের উপরেই তাঁর বিয়ের সমস্ত ছবি ডিলিট করে পারিশ্রমিক না নিয়েই বাড়ি চলে আসেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ওয়েডিং ফটোগ্রাফারের পোস্টটি সামনে আসতেই মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই ওই ফটোগ্রাফারের সৎসাহসের প্রশংসা করেছেন। সাথে সাথে তাঁর বন্ধুর এমন নিষ্ঠুর ব্যবহারের জন্য নানা কটুক্তি করতেও দেখা গিয়েছে বহু মানুষকে।
পোস্টটি করে ফটোগ্রাফার নিজেই নেটিজেনদের উদ্দেশ্যে দুটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘বন্ধুর বিয়ের ছবি এইভাবে মুছে ফেলে তিনি কি কোনও অপরাধ করলেন?’ পাশাপাশি তিনি আরও জিজ্ঞেস করেন ‘ তাঁর কি পারিশ্রমিক নিয়ে আসা উচিত ছিল?’ সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, যদি কেউ কাউকে খাবার কিংবা জল খাওয়ার এবং একটু বিশ্রাম করার মতো সময়ও না দেন তাহলে তাঁর কাউকে কাজ দেওয়াই উচিত নয়। অনেকে আবার ওই ফটোগ্রাফারের বন্ধুকে এক হাত নিয়ে বলেছেন, এমন বন্ধু থাকার থেকে কুকুর পোষা ভালো।