নিজস্ব প্রতিনিধি: কালীপুজোর সকালেই জঙ্গলমহলের বুকে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হাতির হানায় মৃত্যু হল এক যুবকের। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনী ব্লকের মুড়াকাটি এলাকায়। মৃত যুবকের নাম তপন কুঁয়ার(২৮)। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। জামবনীতে তিনি একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে সাইকেল করে কাজে যাওয়ার সময় জঙ্গলের মধ্যে তিনি হাতির দলের সামনে পড়ে যান। তখনই একটি দাঁতাল তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। খবর পেয়েই পুলিশ ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। কালীপুজোর দিনে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় মুড়াকাটি গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তবে এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই রাজ্য বনদফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, মৃতের পরিবার ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে। ৭৫ শতাংশ টাকা প্রথমে মিলবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর পাওয়া যাবে বাকি টাকা। জঙ্গলমহলের বুকে হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু আগে এই ধরনের ঘটনা ঘটতো বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে। মূলত ঝাড়খণ্ডের দলমা পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতির দলই হানা দিত পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের গ্রামগুলিতে। হাতির উৎপাতে জমি ফসল কিংবা ঘরবাড়ি তছনছ করার ঘটনার সঙ্গে জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বিগত ২-৩ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে দলমার হাতির দলের বেশ কিছু হাতি সেখানে ফিরে না গিয়ে জঙ্গলমহলের বুকেই থেকে যাচ্ছে। কার্যত রেসিডেন্সিয়াল হাতিতে পরিণত হচ্ছে তাঁরা। সেই সঙ্গে জল ও খাদ্যের অভাব না থাকায় তাঁদের দ্রুত বংশবৃদ্ধিও ঘটছে। এখন এই হাতির দলই জঙ্গলমহলের জনতার ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
যখন তখন এই রেসিডেন্সিয়াল হাতির দল জঙ্গলের পাশে থাকা গ্রামে ও চাষের ক্ষেতে হানা দিচ্ছে। কখনও বা তাঁরা রাস্তার মধ্যে এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকছে যে ঘন্টার পর ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সব থেকে বেশি যা বেড়ে চলেছে তা হল এই হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা। ঠিক যেমনটি এদিন সকালে ঘটেছে। এর জেরে হাতির ওপর এবার আমজনতা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে যার আঁচ পাচ্ছেন বনদফরতরের আধিকারিকেরা। এদিনই মৃত যুবকের দেহ তুলতে গিয়ে বনদফরের আধিকারিকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।