নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতেমাত্র ৩টে দিন। তারপরেই ৫ তারিখ ফের বুথমুখো হবেন উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) জেলার ধূপগুড়ি(Dhupguri) বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দারা। কেননা সেদিন ওই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। সেই উপনির্বাচনের প্রচারলগ্নের একদম শেষ দিকে শনি দুপুরে সেখানে প্রচারে যান তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। ধূপগুড়ির ঠাকুরপাঠ ফণীরমাঠের সভায় এদিন তিনি পা রাখতেই তাঁকে রাভা, বৈরাতি নৃত্যের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। সেই সঙ্গে চলে উলু ও শঙ্খধ্বনিও। সেই সভা থেকেই এদিন তিনি প্রত্যাশা মতো আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপিকে। সাফ জানিয়েছেন, উনিশ ও একুশের ভোটে ধূপগুড়িবাসীরা ভোট দিয়েছিলেন বিজেপিকে। কিন্তু সেই দুই নির্বাচনের পরে বিজেপি নেতাদের টিকিও দেখা যায়নি এলাকায়। অথচ এখন ফের নির্বাচন দেখে হামলে পড়েছেন তাঁরা। তাঁর কানে গিয়েছে, ধূপগুড়ির অনেক জায়গায় পদ্মশিবিরের নেতারা নাকি টাকা বিলি করছেন। তাঁর পরামর্শ, ‘বিজেপি(BJP) যদি টাকা দিতে আসে, সেই টাকা নিয়ে নিন, কিন্তু ভোটটা তৃণমূলকেই দিন।’
শনিবার ধূপগুড়ির জনসভা থেকে কড়া ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘আপনারা উনিশ আর একুশে আমাদের সমর্থন করেননি। কিন্তু তৃণমূল কী আপনাদের এলাকায় উন্নয়নের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে? লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দেওয়া কী বন্ধ করে দিয়েছে? কোনটাই দেয়নি। কিন্তু বিজেপি আপনাদের ১০০ দিনের টাকা আটকে দিয়েছে। জলপ্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আপনারা ধূপগুড়ি আলাদা মহকুমা করার দাবি জানাচ্ছেন। ২০১৯ এবং ২০২১-এ বিজেপিকে জিতিয়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন করে দেখুন, কত বার সেই দাবি তুলেছেন তাঁরা? যাঁদের ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের প্রশ্ন করা কিন্তু আপনাদের অধিকার। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ধূপগুড়ি মহকুমা হবে। আমি বলতে পারতাম, একবছর বা দেড় বছরে হবে। আমি বলতে পারতাম কীভাবে করা যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। আমি বলছি হবে, করে দেখাব, প্রতিশ্রুতি কাঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছি। এর দায়-দায়িত্ব এই সভা থেকে আমি নিয়ে গেলাম।’
এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘এক সময় রাজ্যে মোদি-শাহরা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করলেও নির্বাচন মিটে যেতেই আর তাঁদের দেখা নেই। আমি দিল্লি-মুম্বইয়ে থাকি না আমি। আমি বাংলার ভূমিপুত্র। কথা দিয়ে না রাখতে পারলে, কোনও দিন আপনাদের আর মুখ দেখাব না। ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবে বলেছিল, দিয়েছে? উল্টে আপনাদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। রাখিতে ২০০ টাকা গ্যাসের দাম কমিয়ে দেখাচ্ছে। ৫ বছরে একবার রাখি আসে না! আসলে ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। এই পদ্মফুল যেন চোখে সর্ষেফুল দেখে। সেই ব্যবস্থা আপানাদেরই করতে হবে। বিজেপির সামনে মনাথা নত করার প্রশ্ন ওঠে না। আপনারাও করবেন না। গণতন্ত্রে গণদেবতা মানুষ, তাঁরাই শেষ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর দম্ভ চূর্ণ করতে ১০ সেকেন্ডও সময় লাগবে না। উনি ভাবছেন, ওঁর হাতে রিমোট রয়েছে, যখন চাইবেন ১০০ দিনে, আবাসের টাকা বন্ধ করে দেবেন। আপনাদের হাতেও ইভিএম-এর বোতাম রয়েছে। ৪৪০ ভোল্ট একেবারে, এখানে বোতাম টিপবেন, দিল্লিতে ছটফট করবে। লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে রান্নার গ্যাসের দাম কমিয়ে ৫০০ টাকায় আনা হবে। ধর্ম নয়, রাজনীতিতে রোটি-কপড়া-মকানের নীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।’