নিজস্ব প্রতিনিধি: পুরনির্বাচনের পালা মিটে গেলেও তার রেশ এখনও রয়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার অন্যতম মহকুমা শহর কাঁথিতে(Contai)। আর সেই রেশের মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে শহরে ছড়িয়ে পড়ল ভাইরাল হওয়া এক অডিও ক্লিপ(Audio Clip)। আর সেই ঘটনার জেরেই এখন কাঁথি জুড়ে শুধু রাজনৈতিক চাঞ্চল্য তীব্র ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাই নয়, একই সঙ্গে অধিকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুটতে শুরু করেছেন শহরবাসীর একাংশ। কেননা ওই অডিও ক্লিপ কাণ্ডে অভিযোগ উঠেছে, অধিকারী পরিবারের অন্যতম সদস্য তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী(Soumendu Adhikari) কাঁথি পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ চৌহানের মাধ্যমে পুরনির্বাচনের প্রাক্কালে শহরেরই এক মহিলা কাউন্সিলরের স্বামী তথা তৃণমূল নেতাকে সুপারি কিলার দিয়ে খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। শুধু তাই নয়, রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি সহ তাঁদের অনুগামী ৪ কাউন্সিলর যাতে কোনও ভাবেই এবার তৃণমূলের টিকিট না পান তার জন্য যত অর্থের প্রয়োজন তা তাঁরা খরচ করতেও নাকি রাজি ছিলেন।
স্বাভাবিক ভাবেই ওই অডিও ক্লিপ ঘিরে এখন কাঁথি তো বটেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ও রাজ্য রাজনীতিতেও রীতিমত তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায়(Social Media) ভাইরাল হওয়া ওই অডিও ক্লিপে দিলীপ চৌহানকে এক মহিলার সঙ্গে কথা বলার অভিযোগ উঠেছে। এই দিলীপ চৌহান(Dilip Chouhan) যে শুধু কাঁথি পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার তাই নয়, সে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীরও রীতিমত ঘনিষ্ঠ। অডিও ক্লিপে বলতে শোনা যাচ্ছে, ভাড়াটে খুনি দিয়ে কাউন্সিলারের স্বামী এবং তৃণমূল নেতাকে খুন করানোর পরিকল্পনা এবং সুপ্রকাশ গিরি সহ চারজন যাতে পুর ভোটে টিকিট না পায় তার জন্য যত অর্থের প্রয়োজন তা দিতে রাজি ওই সহকারী ইঞ্জিনিয়ার। আমজনতার অভিযোগ, কাঁথি পুরসভায় অধিকারী জমানার দুর্নীতি ঢাকতে ভোটের আগে সরাসরি মাঠে নেমেছিল দিলীপ চৌহান। আর সেই সময়েই এক মহিলার সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের অডিও এখন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
অভিযোগ, পুরপ্রশাসক হরিসাধন দাস অধিকারীকও যাতে ওই ইঞ্জিনিয়ারের হাতের মধ্যে থাকেন তার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। সবথেকে বেশি আশঙ্কা শোনা গিয়েছে, কাঁথি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর তনুশ্রী চক্রবর্তী ভট্টাচার্যর স্বামী তথা তৃণমূলের নেতা খোকন চক্রবর্তীকে যেন শেষ করে দেওয়া হয় এই ষড়যন্ত্রের ঘটনা সামনে আসায়। আর এই অডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূলের নেতৃত্ব থেকে পুলিস প্রশাসন। ইতিমধ্যেই শহরের নানা মহলে দাবি উঠেছে এখনই যেন দিলীপ চৌহানকে গ্রেফতার করে জেরা করা হয়। দেখা হোক অধিকারীরা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কতখানি জড়িত! প্রয়োজনে যেন সৌমেন্দু অধিকারীকেও গ্রেফতার করে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সেই দাবিও উঠে গিয়েছে। যদিও এই অডিওর সত্যতা পরীক্ষা করে দেখেনি স্থানীয় প্রশাসন।