এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

খাঁড়ি কী আর ফিরবে, প্রশ্ন ঘুরছে বালুরঘাটের বুকে

নিজস্ব প্রতিনিধি: সে আছে এক নদী, নাম তার আত্রেয়ী। ছিল কোনও কালে সে তিস্তার উপনদী। তারপর পায়ের নীচের মাটিতে উথালপাথাল বদলে দিল তিস্তার স্রোত। আত্রেয়ী ছিন্ন হল তিস্তা থেকে। উৎস মুখ গেল বুজে। কমে গেল জলের স্রোত। আগে যে নদী দিয়ে বজরা যেত, নৌকা যেত, সেই নদী ক্রমশ শুকিয়ে যেতে লাগল। তার সরাসরি কোপ পড়ল নদীর দুইতীরে থাকা মানুষের জীবনে। আত্রেয়ীর একটি শাখা বালুরঘাট শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যেত। লোকে তাঁকে বলত আত্রেয়ীর খাঁড়ি। ক্রমে ক্রমে সেই শাখা নদীও গেল শুকিয়ে। তারপরেই সেই খাঁড়ির দুই পাশের জমি গেল দখল হয়ে। সময় গড়ায়, বছরের পর বছর যায়, খাঁড়ি ক্রমেই হারিয়ে যায়। ঢাকা পড়ে সে জনবসতির ভিড়ে। শেষে অবিশ্রান্ত বৃষ্টি ডেকে আনে বান। ডোবে ঘরবাড়ি, ডোবে উঠোন, চাতাল, মুদিখানার দোকান। এবার মানুষ ফিরিয়ে দিতে চান খাঁড়িকে তার পুরানো স্রোত। কিন্তু সে নদী বইবে কোন পথে, তার যে গিয়েছে পথ হারিয়ে। তাই পুরনির্বাচনে উঠেছে ডাক, আত্রেয়ীর খাঁড়িকে ফিরিয়ে দাও তার পুরানো চেহারায়। সরগরম বালুরঘাট।

দেশ ভাগের আগেই আত্রেয়ীর তীরে ছিল জনবসতি। আত্রেয়ী ধরে নৌকা করে আসত বালি। সেই বালির ঘাট ঘিরেই গড়ে উঠেছিল জনবসতি। পঞ্চাশের দশকে সেই জনবসতি রূপ পেল পুরসভার। তখনও ভাল ছিল শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রেয়ীর খাঁড়ি। কিন্তু বিপদ এল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়। প্রাণ বাঁচাতে ওপার বাংলার হাজার হাজার মানুষ ভিড় করল বালুরঘাটের বুকে। ছিন্নমূল উদ্বাস্তু সেই সব মানুষের আশ্রয় হল ওই খাঁড়ির তীরে থাকা ফাঁকা জমিতে। এরপর আত্রেয়ী দিয়ে অনেক জল গিয়েছে গড়িয়ে। খাঁড়ি দিয়ে কিন্তু জল গড়ানোই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কেননা খাঁড়ির জমি জবরদখল করে সেখানে গড়ে উঠেছে হাজারো মানুষের বসতি। খাঁড়ি গেল হারিয়ে, জমি গেল মানুষের হাতে। ছিটে বেড়ার দেওয়ার, হোগলার ছায়া দেওয়া সেই সব বাড়ির আস্তে আস্তে রূপ বদলেছে। টীনের দেওয়াল, টিনের ছাদ থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সে সব কংক্রিটের চেহারা নিয়ে। সেই সব জনবসতির হাত ধরে বেড়েছে শহরের পরিধিও। আগে যে বালুরঘাট শহর ছিল অবিভক্ত বাংলার এক ছোট জনপদ, স্বাধীনতার পরে তা ক্রমে ক্রমে পশ্চিম দিনাজপুরের মহকুমা শহর ও এখন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সদর শহর।

কিন্তু খাঁড়ি হারাতে বালুরঘাট শহরের সমস্যাও বেড়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এই শহরে রয়েছে পুরসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনেই অন্যতম ইস্যু হয়েছে আত্রেয়ীর খাঁড়িকে তার আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি। এমনিতেই শহরে জলের অভাব রয়েছে। আত্রেয়ী শুকিয়ে যাওয়ায় সেই সমস্যা আরও বেড়েছে বইকি কমেনি। কিন্তু সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে গত কয়েক বছরের ভারী বৃষ্টি। যখনই ভারী বৃষ্টি হচ্ছে তখনই খাঁড়ির জল ডুবিয়ে দিচ্ছে শহরের একটা বড় অংশ। চট করে বৃষ্টির জল, খাঁড়ির জল নেমে যাওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছে না। তাই এখন শহরের কিছু মানুষের ঘুম ভেঙেছে। তাঁরা বুঝেছেন, খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান না করতে পারলে আগামী দিনে গোটা শহর আরও বড় বিপদের মুখে পড়ে যাবে। নদী তখন ক্ষেপে গিয়ে শহরকে গিলে খেতে আসবে। কিন্তু বেড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধবে কে? যারা খাঁড়ির জমি জবরদখল করে বাম জমানায় পাট্টা পেয়ে কংক্রিটের জঙ্গল গড়ে তুলেছে তাঁরা কী সরে যাবে এত সহজে? আর কোথাই বা যাবে? সেই সরে যাওয়ার জন্য তাঁদের যে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তার ব্যয়ভারই বা কে বহণ করবে? এতশত প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে বালুরঘাট পুরনির্বাচনে জ্বলন্ত ইস্যু আত্রেয়ীর খাঁড়ি। যদিও সেই খাঁড়িকে নবজীবন দেওয়ার কাজ তৃণমূল করবে না বিজেপি করবে নাকি বামেরা করবে তা কেউ জানে না।  

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হলে হাতা- খুন্তির লড়াই, হুঁশিয়ারি মমতার

মালদায় পুলিশি অভিযানে উদ্ধার ২৮ কোটির মাদক, ৩২ লাখ টাকা, গ্রেফতার ১

মহিলাদের অপমান করেছে বিজেপি, সন্দেশখালি নিয়ে সুর চড়ালেন অভিষেক

কনে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে শিলিগুড়িতে গাড়ি উল্টে মৃত্যু দু’জনের,আহত অন্তত ২৮

বহরমপুরের কিছু বুথে পুনরায় ভোটের দাবি কংগ্রেসের

বাইরে থেকে ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থন, জানালেন মমতা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর