নিজস্ব প্রতিনিধি: জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নাবালিকাকে(Minor) ধর্ষণ ও তার জেরে মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার ১২ ঘন্টার হাঁসখালি(Hanskhali) বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি(BJP)। সেই বনধে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে এলাকায়। সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে এলাকার দোকানবাজার। রাস্তায় যানবাহনও কম চলছে। পথ চলতি মানুষের সংখ্যাও কম। সপ্তাহের প্রথম দিনেই এই বনধের ধাক্কায় হাঁসখালি ব্লক প্রভাবিত হলেও এই বনধের(Bandh) কোনও প্রভাব পড়েনি নদিয়া(Nadia) জেলার অনান্য জায়গায়। বনধের জেরে হাঁসখালি এলাকায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিন মূলত বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার তরফেই এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। বিজেপির তরফে এই ঘটনায় যারা যারা জড়িত তাঁদের সকলকেই গ্রেফতারের দাবি তোলা হয়েছে। যদিও পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। এদিনই বিজেপির মহিলা মোর্চার একটি প্রতিনিধি হাঁসখালিতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবে।
যে ঘটনাকে ঘিরে হাঁসখালিতে এদিন বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে সেই নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে শ্মশানের বৈধতা নিয়ে। কেননা যে শ্মশানে রাতারাতি নাবালিকার দেহ সৎকার করা হয়েছে সেই শ্মশানটির কোনও সরকারি বৈধতা নেই। সেখানে দেহ সৎকার করতে গেলে কোনও কাগজপত্র বা ডেথ সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয় না। কংক্রিটের চুল্লিতে কাঠ দিয়েই দেহ সৎকার করা হয়। কোনও কারণে শ্মশান কর্তৃপক্ষের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হলে এলাকার বাসিন্দারা পাশের শ্মশান থেকে সেই কাগজ সংগ্রহ করে নেন। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, গত কুড়ি বছর ধরে এভাবেই সেখানে দেহ সৎকার করা হয়। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, যে সরকারি অর্থে ওই শ্মশানে কংক্রিটের চুল্লি তৈরি করা হয়েছে সেই শ্মশানটি সরকারি ভাবে স্বীকৃত না হওয়ার পরেও কেন সেখানে বিধায়ক তহবিলের অর্থ দিয়ে কংক্রিটের চুল্লি নির্মিত হল, তা নিয়েও। সব মিলিয়ে হাঁসখালির ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে স্থানীয় প্রশাসন।
ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গয়ালিকে রবিবার বিকালেই আটক করে। এরপর রাতভর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সোমবার সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিনই তাকে রানাঘাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে। ব্রজগোপালের পাশাপাশি তার দুই বন্ধুকেও আটক করেছে পুলিশ। তাদেরই এদিন আদালতে তোলা হতে পারে। নির্যাতিতার সঙ্গে ব্রজগোপালের যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সেই বিষয়ে নিশ্চিত পুলিশ। তবে ঘটনার দিন ব্রজগোপাল ছাড়া আর কেউ নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করেছিল কিনা তা নিয়ে এখনও সন্দিহান পুলিশ। যেহেতু কোনওরকম পোস্টমর্টেম ছাড়াই নাবালিকার দেহ সৎকার করে দেওয়া হয় তাই তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের একমাত্র ভরসা জিজ্ঞাসাবাদ করা। আর তাই ব্রজগোপালের পাশাপাশি তার যে সব বন্ধুরা সেদিনের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল তাদেরও জেরা করতে চায় পুলিশ। তাই আটকের সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।