নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথমেই হয়তো একটু ধাক্কা খাবেন। ‘মল্লরাজপুর’টা(Mallarajpur) আবার কোথায়? এই মল্লরাজপুরকে সবাই চেনেন বিষ্ণুপুর(Bishnupur) হিসাবে। বাঁকুড়া(Bankura) জেলার অন্যতম মহকুমা শহর তথা মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুর ছিল মল্ল রাজাদের(Malla Dynasty) রাজধানী। সেই থেকেই এই শহরের অনেকগুলি নামের মধ্যে অন্যতম হল মল্লরাজপুর। সেই শহরে থাকা টেরাকোটা মন্দির দেখতে বছর বছর ভিড় জমান বাংলার পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকেরাও। তবে ভিন রাজ্যের পর্যটকদের সেখানে দেখা মেলে কম। সেই শহরের একটি এলাকাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ‘বালুচরি নগরী’(Baluchuri Nagari) হিসাবে। কেননা বালুচরি শাড়ি(Baluchuri Saree) এই শহরের বুকেই তৈরি হয়। যারা এই শহরে ঘুরতে আসেন তাঁরাও চেষ্টা করেন এই শাড়ি কিনতে। পর্যটনের সঙ্গে সেই শাড়ির বিপণনের অঙ্গ হিসাবেই এবার বিষ্ণুপুর শহরের একাংশকেই সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ‘বালুচরি নগরী’ হিসাবে।
আরও পড়ুন কথা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী, গাজোলে হচ্ছে আবাসিক আদিবাসী উচ্চ বিদ্যালয়
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করে তোলার জন্য ঠিক হয়েছে শহরের যে কৃষ্ণগঞ্জ, কৈলাসতলা ও মলডাঙা, যমুনাপাড়া এলাকায় তাঁতশিল্পীদের বসবাস বেশি সেই এলাকাকেই ‘বালুচরি নগরী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। সেখানকার দু’টি প্রধান রাস্তার দু’পাশে থাকা সমস্ত ব্যক্তিগত বাড়ি রাঙানো হবে একই রঙ দিয়ে। দেওয়ালেও থাকবে বালুচরি সম্পর্কিত নানা ছবি। এছাড়াও শাড়ি প্রদর্শনের জন্য কাফেটেরিয়া, তোরণ এবং নগরীর রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে শিল্পীদের কিছু তাঁতযন্ত্রও প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন ৫ কোটি, তাতেই সাজছে জল্পেশ মন্দির
বিষ্ণুপুর শহরে প্রায় ৪৫০টি পরিবার তাঁতশিল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এখানে বালুচরি ও স্বর্ণচরি দুই শাড়িই তৈরি হয়। পুরসভার ১২, ১৭ ও ৭ এই তিনটি ওয়ার্ডে তাঁতশিল্পীরা রয়েছেন। তার মধ্যে ১২ নম্বরে সবচেয়ে বেশি শিল্পী বসবাস করেন। তাই প্রথমে ওই ওয়ার্ডের কৈলাসতলা, মলডাঙা, কৃষ্ণগঞ্জ, যমুনাপাড়া এলাকাকে নিয়ে ‘বালুচরি নগরী’ চিহ্নিত করা হয়েছে। কৃষ্ণগঞ্জ থেকে যমুনাপাড়া এবং কৈলাসতলা থেকে কুসুমতলা পর্যন্ত নগরীর দু’টি প্রধান রাস্তার দু’ধারে থাকা বাড়ির রঙ একই করার পাশাপাশি ওই প্রকল্পের মাধ্যমে বালুচরির প্রচারে একটি কাফেটেরিয়া তৈরি করা হবে। সেখানে শাড়ি প্রদর্শন করা হবে। কৃষ্ণগঞ্জের রথতলা এবং যমুনাপাড়ায় দু’টি তোরণ করা হবে। নগরীর রাস্তাঘাটেরও উন্নয়ন করা হবে।