নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের(Viswabharati University) অচলাবস্থা কাটাতে আবারও কঠোর পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। তবে এবার সেই কড়া মনোভাব দেখানো হয়েছে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের(Students Agitation) বিরুদ্ধে নয়, বরঞ্চ খোদ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কেননা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনের সব ঘরে তালা দিয়ে রাখার। সেই অভিযোগ কতখানি সঠিক তা জানতেই এবার বীরভূমের(Birbhum) পুলিশ সুপারের(Police Super) রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে আদালতে। এদিন এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। আগামিকালই সেই রিপোর্ট বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে জলা দিতে হবে বীরভূমের পুলিশ সুপারকে। একইসঙ্গে আগামিকালের শুনানিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পুলিশ সুপারকে হাজির থাকার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি।
ঘটনা হচ্ছে যে বিশ্বভারতীতে পঠনপাঠন আগেই শুরু হ্যে গিয়েছিল। কিন্তু খোলা হয়নি বিশ্বভারতীর কোনও হোস্টেল। এর জেরে পড়ুয়াদের তরফে বার বার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল বন্ধ হোস্টেল খুলে দিতে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই কথায় কর্ণপাত না করায় পড়ুয়ারা ঘেরাও বিক্ষোভ শুরু করে। এর জেরে প্রায় ৮৫ ঘন্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল অফিসে ঘেরাও হয়ে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, জনসংযোগ আধিকারিক সহ আরও বেশ কিছু কর্মী। গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা শুনানির জন্য ওঠে। বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কাটাতে সেই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলাতেই আদালত ৩ দফা নির্দেশ দিয়েছিল। ওই নির্দেশের অন্যতম ছিল আদালত পড়ুয়াদের আন্দোলনে কোনও রকম হস্তক্ষেপ না করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরি করা যাবে না। দৈনন্দিনের কাজকর্ম সচল রাখতে হবে। প্রতিবাদ করতে হলে তা হবে শান্তিপূর্ণ ভাবে।
কিন্তু এখন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ জানিয়েছে, আন্দোলনকারীরা আদালতের নির্দেশ মেনে চলছে না। পড়ুয়ারা হাই কোর্টের নির্দেশ মানছেন না। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তারা সব দেখেও চুপ করে রয়েছেন। যদিও এদিন পড়ুয়ারা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে। তাঁদের আইনজীবীর দাবি, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। পড়ুয়ারা আদালতের নির্দেশ মেনেই কাজ করছেন। আইন মোতাবেক এবং পুলিশকে জানিয়েই নির্দিষ্ট স্থানে আন্দোলন করছে। দুই তরফের এই চাপানউতোরের মধ্যে সত্যি কোনটা মূলত তা জানার জন্যই এদিন আদালত বীরভূম জেলা পুলিশের সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে তা আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার আদালতে জমা দিতে। সেই সঙ্গে পুলিশ সুপারকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানির সময় উপস্থিত থাকতে। মনে করা হচ্ছে পুলিশ সুপারের রিপোর্ট দেখে আগামিকালই আদালত কোনও কড়া সিদ্ধান্তের কথা জানাবে।