নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা কার্যত শেষের পথে। জুন মাসেই প্রকাশিত হবে সেই পরীক্ষার ফলাফল। তারপরেই রাজ্যের কলেজে(College) কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া(Admission) শুরু হয়ে যাবে। সেই ভর্তির প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ থাকে তার জন্য রাজ্য সরকার এবার কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন(Online) পদ্ধতি চালু করতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) অনুমতিক্রমে এই পদ্ধতি চলতি বছর থেকেই লাগু হয়ে যাবে ও এবার থেকে প্রতি বছর এই পদ্ধতিতেই রাজ্যের কলেজে কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া জারি থাকবে। ফলে প্রতি বছর কলেজে ভর্তির সময়ে তোলাবাজি কিংবা ইউনিয়নের দাদাগিরির যে অভিযোগ ওঠে তা এবার ধামাচাপা পড়তে চলেছে। এই প্রক্রিয়া চালুর জন্য আগামী সপ্তাহে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির(Universities) সঙ্গে এক বৈঠকে বসতে চলেছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। বৈঠকে থাকতে পারেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও।
জানা গিয়েছে, এবার থেকে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে। কোভিডকালে রাজ্যের প্রায় সব কলেজেই অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হয়ে গিয়েছে। তবে তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রিত নয়। আর এই কারণেই দেখা যাচ্ছে, কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন জমা দিতে পারলেও কাউন্সেলিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজে যেতেই হত পডুয়াদের। আর সেই সময়ই টাকা দিয়ে আসন পাইয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটত। এর জেরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ছাত্র সংসদ কোনও ‘হেল্প ডেস্ক’ করতে পারবে না কোনও কলেজে। এমনকি ক্লাস শুরুর আগে পড়ুয়াদেরও কলেজে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তাতে রোগের প্রকোপ কমলেও উপশম একেবারে হয়ে যায়নি। কিছুটা হলেও তা থেকে গিয়েছে। আর এই কারণেই রাজ্যের শিক্ষামহল থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদরা পর্যন্ত বার বার জোর দিতে বলছিলেন কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির অনলাইন প্রক্রিয়া চালু করার জন্য। অবশেষে সেই দাবি মেনে নিল রাজ্য সরকার।
এই পদ্ধতিতে পড়ুয়া কলেজের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করার পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট কলেজ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন জানাবে। এখনও ঠিক হয়নি একজন পড়ুয়া কটি কলেজে ও কটি বিষয়ে ভর্তির জন্য আবেদন জানাতে পারবে। তবে এই প্রক্রিয়ায় সবাই মনোমত কলেজে মনোমত বিষয় নিয়ে পড়ার সুবিধা কতখানি পাবে বা সেই কলেজ বাড়ির কত কাছে হবে তা নিয়ে খটকা থেকেই যাচ্ছে। আর এই জায়গাতেই অনেকে মনে করছেন গরীব ঘরের ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ধাক্কা খেতে পারেন। কেননা কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া হলে সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বরই শেষ কথা বলবে। নম্বরের দৌড়ে যারা পিছিয়ে পড়বে তাঁরা তাঁদের বাড়ির কাছে কলেজে ভর্তির সুযোগ না পেলে উচ্চশিক্ষার সুবিধা আদৌ আর নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।