নিজস্ব প্রতিনিধি: রেল লাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হল দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর এলাকায়। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল। ১৬ বছর বয়স তাঁর।রাজনগর হাইস্কুলে পড়ত সে। তার মায়ের দাবি, প্রিয়াঙ্কাকে খুন করে রেল লাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, এই ঘটনায় জড়িত তার প্রেমিক। যদিও প্রিয়াঙ্কার প্রেমিক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আপাতত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়াঙ্কার বাড়ি কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাজনটোলা গ্রামে। স্থানীয় পার্থ মণ্ডল নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কার পরিবারের লোকজন। পার্থও রাজনগর হাইস্কুলে পড়ে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকাতেই রেল লাইনের ধারে প্রিয়াঙ্কার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। বৈষ্ণবনগর থানা থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে এভাবে এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের খবর চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। দেখা যায়, প্রিয়াঙ্কার গলা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে। তার বুকে ও পেটেও অস্ত্রের কোপ রয়েছে। পাশে একটি ভুট্টাখেতে ধস্তাধস্তির চিহ্ন স্পষ্ট। স্থানীয়দের দাবি, প্রিয়াঙ্কাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে কৌশলে তার দেহ রেল লাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে ।
প্রিয়াঙ্কার মা শেফালি মণ্ডল বলেন, মেয়ে শুধুমাত্র পার্থ ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে মিশত না। একমাত্র পার্থ ডেকে পাঠালে তবেই সে বাড়ি থেকে বেরোত। পার্থও তাঁদের বাড়ির সামনে এসে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে কথা বলত। মেয়ে তাঁকে জানিয়েছিল, সে পার্থকে ভালোবাসে। তার সঙ্গে বিয়ে করতে চায়। তিনি মেয়েকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা পার্থর সঙ্গেই তার বিয়ে দেবেন। বুধবার সন্ধ্যায় পড়া বুঝতে যাওয়ার জন্য গৃহশিক্ষকের কাছে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরোয়। কিন্তু রাতে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ খবর নেন প্রিয়াঙ্কার বাড়ির লোক। জানা যায় সে গৃহশিক্ষকের কাছে যায়নি। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা খবর পান, রেল লাইনের ধারে পড়ে রয়েছে প্রিয়াঙ্কার দেহ। প্রেমিক পার্থ তাঁদের মেয়েকে খুন করেছে বলে অভিযোগ প্রিয়াঙ্কার ময়ের অভিযোগ। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অন্যদিকে অভিযুক্ত ১৭ বছর বয়সী পার্থ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পার্থ জানায়, প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে এই ঘটনায় সে জড়িত নয়। গতকাল রাতে সে বাড়িতেই ছিল। প্রিয়াঙ্কা তাকে জানিয়েছিল, তার বাড়ির লোকজন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু সে এখনও পড়াশোনা করে। একদিকে যেমন তার বিয়ের বয়স হয়নি, তেমনই নিজের পায়েও দাঁড়াতে পারেনি। প্রিয়াঙ্কাকে সে জানিয়েছিল, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সে তাকেই বিয়ে করবে।