নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে(Bay of Bengal) ঘূণীভূত নিম্নচাপ শুক্র ভোরেই ঘূর্ণিঝড়ের(Cyclone) রূপ নিয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিধিলি’(Midhili)। সেই নাম দিয়েছে মালদ্বীপ। সকাল ১০টায় পাওয়া খবর বলছে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান দিঘা থেকে ১২৮কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে। দিল্লির মৌসম ভবনের দাবি, আগামিকাল অর্থাৎ ১৮ নভেম্বর ভোরের মধ্যেই তা বাংলাদেশের(Bangladesh) মংলা বন্দর ও খেপুপাড়া ছুঁয়ে মূল ভূ-খণ্ডে প্রবেশ করবে। সেই সময় তার গতিবেগ ঘন্টায় ১০০কিমির আশেপাশে থাকবে। যদিও এদিন সকাল থেকেই এপার বাংলার(West Bengal) উপকূলবর্তী এলাকায় বেশ ভালই খেলা দেখাতে শুরু করে দিয়েছে মিধিলি। পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলে তীব্র জলোচ্ছ্বাসও(Cyclonic Sea Waves) চোখে পড়ছে। সেই সঙ্গে বইছে ঘন্টায় ৪০কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঘন্টায় ২০কিমি বেগে এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরেছে। স্থলভূমির যত কাছে সে এগোবে ততই তার শক্তি বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে তার গতিবেগও। শুক্রবার শেষরাতের দিকে বা শনিবারের ভোরের দিকে তা মংলা বন্দর ও খেপুপাড়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে স্থল্ভাগে ঢুকে পড়বে। এপার বাংলার উপকূলে মিধিলির আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে বাংলায় না এলেও এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করে দিয়েছে এপার বাংলাতে। সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা জেলাতে। মেঘলা আকাশ কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতেও। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। সময় যত গড়াবে ততই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। সেই কারণে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই দক্ষিণবঙ্গে হলুদ সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছে। এদিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়ার কিছু কিছু এলাকায়। কলকাতা-সহ হুগলি, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে শনিবার পর্যন্ত।
এদিকে মিধিলির জন্য সতর্কমূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সুন্দরবনের ব্লকগুলিতে। যেকোনও পরিস্থিতিতে সাগর, গোসাবার অঞ্চল নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তা থাকে প্রশাসনের। তাই তারা আগে থেকেই সতর্ক। যেমন সাগর ব্লকে যে সব এলাকায় দুর্বল নদীবাঁধ রয়েছে, বা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেখানে সবপক্ষকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছে ব্লক প্রশাসন। পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারকে তৈরি রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, গোসাবাতেও গ্রামবাসীদের মধ্যে প্রচার শুরু করেছে প্রশাসন। বিভিন্ন নদীবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় মাইকিং করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে মৎস্যজীবীদের নদী ও সমুদ্রে নামতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে প্রায় সব ট্রলার বন্দরে ফিরে এসেছে বলেও জানা গিয়েছে। কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সব রকমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেচ দফতরের আধিকারিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে বেহাল নদী বাঁধগুলির ওপর।