এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

ঋণের বোঝা! ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সামনেই বিষ খেলেন কৃষক

নিজস্ব প্রতিনিধি, গাজোল: বর্ষার জেরে নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। তাই ব্যাঙ্কের ঋণ সময়মতো শোধ করতে পারছিলেন না। তাই শেষমেষ জমিই বিক্রি করে দেন মালদার আলমপুরের এক কৃষক প্রতাপচন্দ্র ঘোষ। জমি বিক্রির চেক নিয়ে যখন ব্যাঙ্কে যান, তখন জানতে পারেন অ্যাকাউন্টটাই নাকি ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঋণের টাকা শোধ না করলে ওই অ্যাকাউন্টও আর খোলা হবে না বলেই জানান ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। এ নিয়ে অন্যান্য গ্রাহকদের সামনেই রীতিমতো অপমান করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সামনেই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রতাপ। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মালদার আলমপুর ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা বছর ৩৪-এর প্রতাপচন্দ্র ঘোষ। পরিবারে স্ত্রী সোনালি ঘোষ ছাড়াও ১১ এবং ১২ বছর বয়সী দুই নাবালিকা মেয়ে ও বৃদ্ধা মা রয়েছেন। প্রতাপের নিজের প্রায় ১০ বিঘা জমি রয়েছে। ফসল উৎপাদনের জন্য গতবছর স্টেট ব্যাঙ্কের আলমপুর ব্রাঞ্চ থেকে দু’ লক্ষ টাকা কৃষি লোন নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভরা বর্ষায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ফসল উৎপাদন না হওয়ায় ঋণের কিস্তির টাকাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা করতে পারেননি। এনিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বাড়িতে একাধিকবার লোকও এসেছে। শুধু ব্যাঙ্ক-ঋণই নয়, আনুষাঙ্গিক আরও অনেক ধারও রয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করে জমিটিই বিক্রি করে দেন প্রতাপ। কিন্তু তাতেও সমস্যা মিটল না।

অসুস্থ কৃষকের স্ত্রী সোনালি ঘোষ জানিয়েছেন, মায়ের চিকিৎসার জন্য কিছুদিন আগেই স্বামী প্রতাপচন্দ্র ঘোষ একটি জমি বিক্রি করে। যার দরুন কয়েক লক্ষ টাকা মেলে। সেই চেক দু’দিন আগেই ব্যাঙ্কে জমা করা হয়। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চেকটি আটকে দেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক অনুরোধ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বকেয়া টাকা কেটে নিয়ে বাকি টাকা ভাঙানোর অনুরোধ করলেও ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তাতে রাজি হননি। এমনকী, প্রতাপ যখন বলে ”আপনারা এমন করলে আমার আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনও পথ থাকবে না।” তখন ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের উত্তর ছিল, ”আপনার মতো সাধারণ মানুষ মরে গেলে কার কী ক্ষতি হবে? বরং আগে ঋণ মেটান তারপর মরুন। কেউ দেখতে যাবে না।”

এরপরেই সঙ্গে থাকা কীটনাশক খেয়ে নেন প্রতাপ। এই ঘটনার সমস্ত সিসিটিভির ফুটেজ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছেন আহত কৃষকের পরিবার। শনিবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গাজোল থানার আলমপুর এলাকার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। বর্তমানে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই কৃষক। এদিকে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সঞ্চার হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের।

ই ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বলি সামান্য কিছু টাকা দিয়ে আমাদের উদ্ধার করুন। পরে লোনের টাকা শোধ করে দেওয়া হবে। কারণ, বাড়িতে অসুস্থ মানুষ রয়েছে । চিকিৎসা করাতে হবে । কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনরকম ভাবে আমাদের কথায় গুরুত্ব দিতে চাই নি। অবশেষে হতাশ হয়েই আমার স্বামী সকলের সামনেই ব্যাংক ম্যানেজারের উপস্থিতিতেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে। পুরো ঘটনাটি নিয়ে আমরা ভেঙে পড়েছি। সংকটজনক অবস্থায় মেডিকেল কলেজে আমার স্বামীর চিকিৎসা চলছে। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কৃষি ঋণের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা বা সমস্যায় পড়লে তদারকি করে মকুব করার কথা বলছেন। সেখানে এভাবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের জোর-জুলুম কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যদি এই ঘটনায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের শাস্তি না হয়, তাহলে আগামিদিনে বড়সড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তাঁরা।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হলে হাতা- খুন্তির লড়াই, হুঁশিয়ারি মমতার

মালদায় পুলিশি অভিযানে উদ্ধার ২৮ কোটির মাদক, ৩২ লাখ টাকা, গ্রেফতার ১

মহিলাদের অপমান করেছে বিজেপি, সন্দেশখালি নিয়ে সুর চড়ালেন অভিষেক

কনে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে শিলিগুড়িতে গাড়ি উল্টে মৃত্যু দু’জনের,আহত অন্তত ২৮

বহরমপুরের কিছু বুথে পুনরায় ভোটের দাবি কংগ্রেসের

বাইরে থেকে ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থন, জানালেন মমতা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর