নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রদেশ কংগ্রেসের(INC) নেতাদের জন্য খুশ খবর কিনা জানা নেই। এটাও জানা নেই এই খবরে উত্তর দিনাজপুর(Uttar Dinajpur) জেলা কংগ্রেসের নেতারা কে কতটা খুশি হবেন। এমনকি কালিয়াগঞ্জের(Kaliyaganj) কংগ্রেস নেতারাও কতখানি খুশি হবেন সেটাও বোঝা দায়। কেননা যাকে নিয়ে এই খবর তিনি না কালিয়াগঞ্জে আর স্বামীর ভিটেতে পা রাখেন, না জেলার মাটিতে পা রাখেন না প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেন। ছেলে মিছিলকে নিয়ে এখন তাঁর বসবাস দেশের রাজধানীর বুকেই। বাংলার রাজনীতি থেকে তিনি এখন শত হস্ত দূরে। তবুও তিনি প্রিয় ঘরণী। তাই তাঁর জীবনে রাজনৈতিক ভাবে কিছু ঘটলে বাংলার অনেকেরই তা চোখে পড়বে। এবারও পড়েছে। নজরে দীপা দাসমুন্সি(Deepa Dasmunshi)। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির(Priya Ranjan Dasmunshi) স্ত্রী। সেই দীপার কদর বাড়ল কংগ্রেসে।
আরও পড়ুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য পেলেও এবার পদত্যাগ ডিন অফ সায়েন্সের
আজ ২০ অগাস্ট। দেশের প্রাক্তন এবং অন্যতম জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির জন্মদিন। আর এই দিনেই নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিকে। রবিবার নতুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ঘোষণা করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এতদিন সোনিয়া গান্ধীর নির্বাচিত স্টিয়ারিং কমিটিকে নিয়েই কাজ চালাচ্ছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। এবার পুরোদস্তুর নয়া টিমকে লোকসভা নির্বাচনের আগে ময়দানে নামালেন তিনি। আগের ওয়ার্কিং কমিটিতে খুব একটা বড় পরিবর্তন না ঘটালেও একাধিক নতুন নাম যুক্ত করা হয়েছে তালিকায়। সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী সহ মোট ৩০ জন রয়েছেন এই নয়া কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে। রয়েছেন বাংলার প্রদেশ সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী, এ কে অ্যান্টনি সহ অন্যরা। দীর্ঘ কয়েক বছর পর আবারও কংগ্রেসে বড় দায়িত্ব পেলেন দীপা দাসমুন্সিও। তাঁকে আনা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে। এই পদে রাখা হয়েছে কংগ্রেসের মোট ৯জন নেতাকে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির তালিকায় মাত্র ৩জনের বয়স ৫০ বছরের নীচে। বাকিরা প্রত্যেকেই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এবং দুঁদে রাজনীতিবিদও বটে। দীপাকে তেলেঙ্গানায় দলের পর্যবেক্ষকও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন বাংলাদেশ সীমান্তে এপার বাংলায় ৮টি জেলায় হবে সীমান্ত হাট
এখন প্রশ্ন হুট করে দীপার গুরুত্ব কেন বাড়ল কংগ্রেসে? প্রথম কারণ দীপা বাংলার রাজনীতি থেকে শত যোজন দূরে চলে গিয়েছেন প্রায় ৭ বছর। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে তাঁকে আর বাংলার রাজনীতিতে দেখা যায়নি। কার্যত প্রদেশ কংগ্রেসের কোনও নেতা, জেলা কংগ্রেসের কোনও নেতা মায় প্রিয়্রঞ্জন দাসমুন্সির নিজের শহর কালিয়াগঞ্জেরও কোনও কংগ্রেস নেতার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। কিন্তু দীপা কংগ্রেসকে ছেড়ে দেননি। সোনিয়া-রাহুলদের বিরুদ্ধেও কোনওদিন একটি শব্দ খরচ করেননি। বিজেপি কিন্তু তাঁকে কাছে টানতে চেয়েছিল। সেই ফাঁদে পা দেননি দীপা। তারই দাম এদিন পেলেন তিনি। দ্বিতীয়ত, দীপা বরাবরই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসাবেই চিহ্নিত। একই সঙ্গে তিনিও অধীরের মতোই তীব্র মমতা বিরোধী। আগামী দিনে দীপাকে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়তিও দেওয়া হতে পারেম যাতে বাংলায় তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলায় কংগ্রেসের ভিত্তিটি মজবুত করতে পারেন। সেই জন্যই এখন তাঁকে তেলেঙ্গানার দলীয় পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। সোনিয়া-রাহুল দেখতে চাইছেন, দীপে সেখানে কেমন কাজ করেন। তারপর সময় হলে তাঁর হাতেই বাংলায় দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে। মমতার বিরুদ্ধেই তখন দীপা হয়ে উঠবেন সোনিয়া রাহুলের বোড়ে।