নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) নির্দেশে চাকরি গিয়েছে একই স্কুলের দুইজন শিক্ষক-শিক্ষিকার। আর তার জেরে পঠন-পাঠন থমকে গিয়েছে একটি স্কুলে। দুইজন শিক্ষিক-শিক্ষিকার শূন্যস্থান দ্রুত পূরণ করতে চেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুল ইনস্পেক্টরের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কবে সেই পদ পূরণ হবে তার আশ্বাস কোনও জায়গা থেকেই পাচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর তার জেরে ওই স্কুলের পঠন-পাঠন চূড়ান্ত ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। যে স্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে তা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার সদর মহকুমার পাঁশকুড়া(Panshkura) থানা এলাকায়। স্কুলের নাম মাংলই প্রাইমারি স্কুল(Mangloi Primary School)। ২০১৪ সালে টেট(TET) পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট ৩০ জনের চাকরি খারিজ হয়েছে। তারমধ্যে মাংলই স্কুল থেকে বরখাস্ত হয়েছেন নবকুমার বেরা ও পারমিতা মণ্ডল। একসঙ্গে দু’জনের চাকরি বাতিল হওয়ায় এখন পঠনপাঠন কার্যত থমকে গিয়েছে এই স্কুলে।
মাংলই প্রাইমারি স্কুলের টিচার ইন-চার্জ মৌসুমি আদক জানিয়েছেন, ওই প্রাইমারি স্কুলের মোট ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ১৩৭ জন। ওই স্কুলে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ক্লাস হয়। মোট ছ’টি ক্লাসে এতদিন ছ’জন শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু এখন সেখানে চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। ফলে দুটি ক্লাস সবসময় ফাঁকা যাচ্ছে। আবার এই ৪জনের মধ্যে ১জন ছুটিতে থাকলে বা কোনও কারনে আসতে না পারলে ফাঁকা ক্লসের সংখ্যা ৩ ছুঁয়ে ফেলছে। সব থেকে বেশি ধাক্কা খাচ্ছে প্রাক-প্রাথমিকের পড়ুয়ারা। সেখানে ২১ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। মৌসুমি জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতির নজরে আনা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের পর এখন শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা কমে মাত্র চার। অতিরিক্ত শিক্ষক চেয়ে আবেদন জানিয়েছি। অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক তুলে মাংলই প্রাইমারিতে পাঠানো হবে বলে কানে এসেছে। চারজন শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়ে স্কুলে ছ’টি ক্লাস চালানো যায় না। অবিলম্বে অন্য জায়গা থেকে শিক্ষক দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’
ভিলেজ এডুকেশন কমিটির সভাপতি তথা মাংলইয়ের পঞ্চায়েত সদস্যা মালতি রানা জানিয়েছেন, ‘১৩৭ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য অন্তত ছ’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রয়োজন। কোর্টের নির্দেশে দু’জনের চাকরি চলে গিয়েছে। তাঁদের জায়গায় দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঠানো দরকার। আমরা পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা স্থায়ী সমিতির কাছে এই দাবি পেশ করেছি।’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সার্কেল অফিস থেকে এনিয়ে রিপোর্ট করা হয়েছে। আমরা দ্রুত সেখানে শিক্ষক পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।’