নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে আছে কন্যাশ্রী-রূপশ্রীর মতো প্রকল্প। কিন্তু তার পরেও আটকানো যাচ্ছে না নাবালিকাদের বিবাহ(Minor Aged Girls Marriage)। সেই প্রেক্ষাপটেই এবার চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চারজন নাবালিকার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল তাদের বাবা-মা। দেরীতে হলেও সেই ঘটনার কথা পুলিশের(Police) কানে পৌঁছাতেই ঘটনার তদন্তে নামেন আইনের রক্ষকরা। সেই পুলিশি পদক্ষেপেই আটক করা হয়েছে ৪জন নাবালিকাকে। সেই সঙ্গে গ্রেফতার(Arrest) করা হয়েছে তাদের স্বামী(Husband) সহ বাবা-মা ও শ্বশুর-শাশুড়িদেরও। সব মিলিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন মোট ১৪জন। ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার মহিষাদল(Mahishadal) ব্লকের সতীশ সামন্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কমলপুর গ্রামের। যে ৪জন নাবালিকাকে আটক করা হয়েছে তারা অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রী। সব থেকে বড় কথা এবারই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ৪ যুবকের প্রথমবার জামাইষ্ঠী করতে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই ৪জনের ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে।
আরও পড়ুন দৃষ্টিহীনদের সহায়তায় Smart Cap, তাক লাগালো Class 9’র পড়ুয়া
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে ওই ৪জন নাবালিকার বিয়ে হয়েছে। ৪জনই প্রেম করেই বিয়ে করেছে। কার্যত তাদের প্রেমের কথা জানতে পেরেই দুই বাড়ির তরফে উদ্যোগী হয়ে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিয়ের আগে বা বিয়ের সময় পুলিশ সেই খবর না পেলেও বিয়ের পরে তাঁরা জানতে পারেন ৪ কন্যাই নাবালিকা। সমস্ত তথ্য জোগাড় করে বুধবার ওই ৪ নাবালিকা, তাদের স্বামী, বাবা-মা ও শ্বশুড়-শাশুড়িকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। সেখানেই তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, ৪জন মেয়েই নাবালিকা বলে সেই বিয়ে অবৈধ। আইনে চোখে এই বিয়ে মেনে নেওয়া যায় না। তাই ওই ৪ নাবালিকার ৪ স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে POCSO আইনে। বাকি ১৪জনের বিরুদ্ধেও সেই ধারায় ধর্ষণে মদত দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন চাই মোটা মাইনের চাকরি, লোক নিচ্ছে Kharagpur IIT
তবে এরই মাঝে সামনে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, ৪ নাবালিকার বিয়ের ঘটনা ঘটেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রত্যক্ষ মদতে। এলাকার জন প্রতিনিধিদের কাজ হল সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া। সেটা তাঁদের করা উচিৎ। সেই জায়গায় যদি তাঁদের মদতেই এই ধরনের অনৈতিক কাজ চলে, তাহলে এর থেকে লজ্জাজনক আর কিছু হয় না বলেই অভিমত তাঁদের। কার্যত ব্লক প্রশাসনেরও সাফ বক্তব্য, সরকারি নিয়মকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এরা বিয়ে করেছে। নাবালিকার বিয়ে কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হয় না। এমন বিয়ের ফলে প্রসূতি মৃত্যুর হার বেড়েছে। এই বিষয়ে সকল স্তরের মানুষের সচেতন হওয়া খুব দরকার। নাবালিকাদের বিয়ে আটকাতে একাধিক বার প্রশাসনের তরফে সচেতন করার চেষ্টা করা হলেও বিষয়টা মানতে চান না অনেক অভিভাবক। তাঁরা অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। আগামি দিনে যাতে এই ধরণের ঘটনা না ঘটে, তাই এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামি দিনে এই ঘটনা ঘটলে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।