নিজস্ব প্রতিনিধি: পূণ্য সংগ্রহ করতে কে না চান! আর কেই বা পাপ বহণ করে নিয়ে চলতে চান! তাই সুযোগ পেলে কেউই তা হারাতে চান না। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মের মানুষেরা চান মৃত্যুর আগেই যাবতীয় পাপ ধুয়ে নিয়ে পুণ্যের ঝুলি ভরিয়ে তুলতে। সেই পাপ-পুণ্যের বিচারের জায়গা থেকেই মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে মকরসংক্রান্তির(Makar Sangkranti) ভোরে গঙ্গাস্নানের ইচ্ছা। কেউ ডুব দেন প্রয়াগের গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর সঙ্গমে, আবার কেউ ডুব দেন গঙ্গাসাগরের(Gangasagar) সঙ্গমে। এক আধ জন নয়, এই পুণ্যতিথিতে ডুব দেন কয়েক কোটি মানুষ। এবারেও মকরসংক্রান্তির সকালে সেই ছবি ধরা পড়েছে প্রয়াগের পাশাপাশি গঙ্গাসাগরের বুকেও। এদিন সকালেই আবার গঙ্গাসাগরে একসঙ্গে মকরস্নান সেরেছেন রাজ্যের ৩ মন্ত্রী। এরা হলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়(Sovondev Chattopadhay), রাজ্যের জনস্বাস্থ্যমন্ত্রী পুলক রায়(Pulak Roy) এবং রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী(Snehasish Chakrabarty)। পাশাপাশি এদিন বাংলার বুকে একাধিক জায়গায় ভোর থেকেই চলছে আমজনতার পুণ্যস্নান।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী সোমবার দুপুর পর্যন্ত গঙ্গাসাগরের বুকে মকরস্নান সেরে ফেলেছেন প্রায় ৭৫ লক্ষ মানুষ। আবার বীরভূমের জয়দেবের বুকে অজয় নদে এদিন ভোর থেকেই পুণ্যস্নান সেরে ফেলেছেন কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী। গঙ্গাসাগর হোক কী জয়দেবের মেলা, দুটি ক্ষেত্রেই কড়া নজরদারির মধ্যে চলছে পুণ্যস্নান। একই সঙ্গে এদিন রাঢ় বাংলার বুকে একাধিক জায়গায় চলছে টুসু ভাসানোর পরবও। ভোরে দক্ষিণবঙ্গের গ্রামগঞ্জে নাড়া পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও পিঠেপুলির স্বাদে জিভকে আস্বাদিত করার পালাও রয়েছে ঘরে ঘরে। মকরসংক্রান্তি উপলক্ষ্যে মেলাও চলছে গ্রামবাংলার নানা জায়গায়। মেদিনীপুর শহরের গান্ধিঘাটে মেলা আর স্নান দুটোই চলছে একযোগে। আসলে একটা প্রবাদ বাক্য আছে, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর’। সেই বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়েই এদিনের মহাস্নান। যদি হাড় কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই বরফ শীতল জলে ডুব দিয়ে কিছু পাপ ধুইয়ে যায় আর কিছু পুণ্যের সঞ্চার হয়। কাটোয়া ও উদ্ধারাণপুর ঘাটেও এদিন গঙ্গা স্নান করেছেন কয়েক হাজার মানুষ।