নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলার অগ্নিকন্যা, বাংলার বিরোধী দলনেত্রী। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের হাত ধরে হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু লড়াকু ইমেজ তিনি ছেড়ে দেননি। এখনও তিনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই লড়াই কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকারের(Modi Government) বিরুদ্ধে লড়াই। প্রতিটি সভা থেকেই ধারাবাহিক ভাবে তিনি নিশানা বানাচ্ছেন বিজেপিকে। কেন্দ্রের সরকারকে। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের(Jhargram) সভা থেকেও সেই আক্রমণের ধারা বজায় রাখলেন তিনি মানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সরব হলেন বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, আধার কার্ড বাতিলের(Aadhar Card Deactivation) কথা, NRC-CAA লাগুর কথা, সব কিছুই ছুঁয়ে গেলেন সুনিপুণ ভাবে।
এদিনের সভা থেকে মমতা কেন্দ্রকে নিশানা বানানো শুরু করেন ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়া ও রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যের ৫৯ লক্ষ মানুষের কাছে তাঁদের বকেয়া মজুরি পৌঁছে দেওয়ার বার্তা দিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে একটা ছেলের সঙ্গে কথা বললাম। ও ১০০ দিনের কাজ করেছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই তুমি ১০০ দিনের কাজ করেছিলে সেই টাকা পেয়েছ? বলল হ্যাঁ দিদি ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি। ভাবুন এই টাকা ওরা আটকে রেখেছিল। আমরা দিয়ে দিয়েছি। খুব বড় কাজ করেছি। আমরা ৫৯ লক্ষ লোককে পৌঁছে দিয়েছি টাকাটা।’ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে NRC-CAA লাগুর কথা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসলেই NRC। নির্বাচন আসলেই করবে ক্যা ক্যা, এগুলো সব ছলনা মনে রাখবেন। একটা মানুষকেও তাড়াতে দেব না। NRC-CAA লাগু হলেই জানবেন ৫ বছরের জন্য তাঁকে ফরেনার হয়ে যেতে হবে। তাহলে রেশন পাবে কোথা থেকে?’
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী চলে আসেন আধার কার্ড বাতিলের প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে দেখছি আধার কার্ড কেড়ে নেওয়া হল। আমরা ফোঁস করলাম। আমরা পাল্টা করে দেব বলেছিলাম। আধার কার্ড কেন কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল? এটা করা যাবে না। আসলে ওরা বাংলাকে ভালোবাসে না। ওরা বঞ্চনা করে। কিছু গরীব লোককে লুকিয়ে লুকিয়ে উজালা দেওয়া হচ্ছে। ১ হাজার টাকার গ্যাসে জ্বলছে বিনা পয়সার চাল। আর ওরা যদি ক্ষমতায় আসে, গ্যাসের দাম ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা করে দিতে পারে। আবার ঘুটে দিতে হবে, গুল দিতে হবে। এবার যদি ওরা ভোটে জেতে তাহলে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেবে। আমাদের বাংলাকে ওরা ভালবাসে না। আমরা ৪৭ লক্ষ ঘর করে দিয়েছি। আমাদের টাকা রয়েছে ওখানে। কেন্দ্রকে টাইম দিয়েছি, এপ্রিল মাসের মধ্যে করতে হবে। না হলে মে মাসে আমরা বুঝে নেব। এপ্রিল মাসের মধ্যে কেন্দ্র টাকা না দিলে মে মাস থেকে আমরা কী করি, দেখে নেবেন। সব মা-বোনদের বলছি, ওদের একটুও বিশ্বাস করবেন না। ওরা কিছু দেবে না। যা দেওয়ার তা শুধু আমরাই দেবো। ১ এপ্রিল থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডারে হাজার টাকা করে পাবেন। জনম জনম পাবেন। যত দিন বেঁচে থাকবেন, পাবেন। আমাদের সরকার যতদিন থাকবে ততদিন দেব। ওদের আর ভোট দেবেন না।’