নিজস্ব প্রতিনিধি: নদিয়া জেলার হাঁসখালিতে(Hanskhali) নাবালিকা ধর্ষণ ও তার পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুর ঘটনায় এবার প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সোমবার কলকাতায় বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণের(Biswabangla Mela Prangan) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হাঁসখালির ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘হাঁসখালিতে একটা বাচ্চা মেয়ে মারা গেছে। ঘটনাটা খারাপ। কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু প্রথমেই কেন থানায় রিপোর্ট করা হয়নি? ধর্ষণ, প্রেম না অন্তঃসত্ত্বা(Pregnant) বলবেন! আমি তো শুনলাম ওদের প্রেমের(Love Affairs) সম্পর্কও ছিল। যে ঘটনা ঘটেছে সেটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক, খারাপ। কিন্তু দেরিতে অভিযোগ দায়ের হল কেন? কেন ঘটনার পাঁচ দিন পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করল নির্যাতিতার পরিবার। কেন অভিযুক্তের বাবার রাজনৈতিক পরিচয় বড় করে দেখা হচ্ছে?’ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়েই এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে বাংলায়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণের অনুষ্ঠান থেকে বলেন, ‘হাঁসখালির ঘটনাকে আপনি রেপ বলবেন না কি প্রেগনেন্ট বলবেন নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন? ঘটনাটা খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। মেয়েটার নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল শুনেছি। মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন? কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ? তারপরও আমি পুলিশকে বলেছি রাজনৈতিক রং না দেখে ঘটনার যথাযথ তদন্ত করতে। মেয়েটির যে লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল সেটা তার বাড়ির লোকেরা জানত। প্রতিবেশীরা সেটা জানত। এখন যদি কোনও ছেলেমেয়ে প্রেম করে, সেটা আমার পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয়, যে লভ জিহাদ প্রোগ্রাম করব।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন হাঁসখালি কাণ্ডে সব থেকে বেশি সরব হয়েছেন ঘটনায় তৃণমূলযোগ টেনে এনে বিরোধীদের আক্রমণ করার প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অন্যায় করলে শাস্তি হবে। তাই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। এবং সেটা কোনও রাজনৈতিক রঙ না দেখেই। কিন্তু মনে রাখবেন এটা মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে নয়। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। কী করবেন বলুন, এখানে সবাই তৃণমূল দল করেন। তাই তৃণমূলকে টানবার কী দরকার! পশ্চিমবঙ্গে সবাই তৃণমূলে। বাবা যদি তৃণমূল করে…ছেলে প্রেম করেছে না কী করেছে, তাতে তৃণমূলকে টানা কেন? কেউ বন্ধু হয়ে যেন কারও ক্ষতি না করে সেই ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এই ঘটনা থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। শিশু কমিশন এই ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট দেবে। কিন্তু ছেলেমেয়েরা প্রেম করলে, সেটা আমার পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়।’