নিজস্ব প্রতিনিধি: মধুসূদন দত্ত হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে খ্রীষ্ট ধর্মাম্বলম্বী হয়েছিলেন ইংরেজি ভাষায় কবিতা লিখে সাহেবমহলে কদর পাওয়ার জন্য। পাশাপাশি ইংরেজদের সমাজের একজন হয়ে উঠছে মেম বউ বিয়ে করার পাশাপাশি দেদার মদ্যপানও শুরু করেন। চলে যান দেশ ছেড়ে বিলেতে। কিন্তু কদর পাননি। বিলেতের সমাজ তাঁকে গ্রহণ করেনি। প্রচন্ড দুরাবস্থার মুখে পড়ে উপলব্ধি করেছিলেন, ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন, তা সবে অবোধ আমি অবহেলা করি’। সেই দূরাবস্থা থেকে তাঁকে উদ্ধার করেছিলেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। নিজের গ্যাটের কড়ি খরচা করে মাইকেলকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তাঁর মাতৃভূমি বাংলার বুকে। আসলে মায়ের বিকল্প কিছুই হয় না। মাতৃভূমিরও বিকল্প কিছু হয় না। বিদেশভূমে চাকরিসূত্রে গিয়ে সেখানেই বসবাস করে যাওয়া বাঙালির সংখ্যা কিছু কম নয়। এই প্রবাসী বাঙালিদেরই এবার বাংলার(Bengal) সঙ্গে আরও একবার যোগসূত্র গড়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। প্রবাসী ভারতীয় তথা বাঙালি(NRI Bengali), বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের আলাদা পরিচয়পত্র(Identity Card) দিতে উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। তাঁদের জন্য ইস্যু করা হচ্ছে ‘আপন বাংলা’(Aapan Bangla) কার্ড।
আরও পড়ুন ক্যান্সারের ইঞ্জেকশান, দাম ৮০ হাজার, মিলবে বিনামূল্যে
কী এই ‘আপন বাংলা’ কার্ড? নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কার্ডের সুবাদে বাণিজ্য সম্মেলনগুলিতে সামিল হতে পারবেন এই প্রবাসী বাঙালিরা। এর ফলে রাজ্যে বিদেশি বিনিয়োগের পথ সুগম হবে। এই কার্ডে পাসপোর্ট নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং তিনি কোন দেশের বাসিন্দা, তা উল্লেখ করা থাকবে। এই পরিষেবার জন্য ‘আপন বাংলা’ নামে একটি নয়া পোর্টালও চালু করছে রাজ্য। বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে এই পোর্টালের মাধ্যমে প্রবাসীরা এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। পোর্টালে নির্দিষ্ট তথ্য দেওয়ার পরে কার্ড তৈরি হয়ে যাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই। এঁদের জন্য প্রবাসী বাংলা সহায়তাকেন্দ্রও চালু করা হবে। প্রবাসীরা যাতে নিজের শিকড় চিনতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁদের নিয়ে পৃথক পর্যটন পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের। নিজের জেলাকে চেনানোর জন্যও থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন, কলকাতা বইমেলা, কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভালে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশেষ অগ্রাধিকার পাবেন তাঁরা। তবে একটি বিষয়ে প্রশ্ন ঘুরছে তা হলে কেন্দ্রের অনুমোদন। কেন্দ্রকে বাইপাস করে রাজ্য সরকার এই ধরনের কোনও কার্ড ইস্যু করতে পারে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। আবার ক্ষমতা থাকলেও কেন্দ্র সরকার প্রবাসী বাঙালিদের বাংলায় বিনিয়োগে বাধা দিলে কী হবে সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে।