নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায়(Bengal) ক্রমশ বাড়ছে কর্কট(Cancer) রোগের হানাদারি। তথ্য আর পরিসংখ্যান বলছে বাংলায় জেলাগত ভাবে যে হারে ক্যান্সার ছড়াচ্ছে তাতে আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। তার পরেই রয়েছে দুই বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতা। পরের ধাপে রয়েছে হুগলি ও হাওড়া। দেশে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ৯৪ জন পুরুষ ও ১০৪ জন মহিলা ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতি বছর। এভাবেই যদি চলে তাহলে আর ২ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২৫ সালে দেখা যাবে বাংলার প্রায় ১.২৫ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার এবার এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ করতে চলেছে এই ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য একটি ইঞ্জেকশান রয়েছে। নাম তার নিভোলুমাব(Nivolumab)। ১০০ মিগ্রার এই ক্যান্সারের ইঞ্জেকশনটির এক-একটি ভায়ালের দাম ৮০ হাজার ৫০০ টাকা। একই ইঞ্জেকশনের ৪০ মিগ্রার একটি ভায়ালের দাম ৩২ হাজার ৪০০ টাকা। এবার এই ইঞ্জেকশনই আমজনতা পাবেন বিনামূল্যে। সৌজন্যে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
আরও পড়ুন ক্যান্সারে বিদ্ধ বাংলা, ২০২৫-এ আক্রান্ত হবেন অন্তত ১.২৫ লক্ষ মানুষ
ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিভোলুমাবের তাৎপর্য হল, এটি সাধারণ কোনও কেমোথেরাপি ইঞ্জেকশন নয়। এটি একটি ইমিউনোথেরাপি ড্রাগ। বর্তমানে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি কিছু কিছু মরণাপন্ন ক্যান্সার রোগীর ক্ষেত্রে ভালো কাজ দিচ্ছে। তবে ঠিক কোন ক্যান্সার আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এটি সাফল্য দেবে, তা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। সব থেকে বড় কথা এই ইঞ্জেকশন এতটাই দাম যে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত বঙ্গবাসীর কাছে তা অধরা হয়েই থেকে যায়। কার্যত আমজনতার ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গিয়েছিল এই ইঞ্জেকশন। কিন্তু এবার সেটাই আসছে আমজনতার নাগলে এবং একদম বিনামূল্যে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের ক্যান্সার চিকিৎসকরা এই বহুমূল্য ওষুধটির অপচয় ঠেকাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে একটি এক্সপার্ট কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছেন। কেননা তাঁরা চাইছেন, অত্যন্ত দায়িত্বশীলভাবে এই দামি ওষুধটি ব্যবহার করা হোক। অপব্যবহার বা অপচয় যাতে না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখার ওপর জোর দিতে বলছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন বিধানসভায় ২১ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গৃহীত
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের ইডিএল বা এসেনশিয়াল ড্রাগ লিস্টে এই দামী ইঞ্জেকশন ঢুকেছিল আগেই। কিন্তু বারবার বাতিল হচ্ছিল টেন্ডার। অবশেষে টেন্ডার প্রক্রিয়া সফল হয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের অনুমতিও মিলেছে। শীঘ্রই রাজ্যের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ ও বড় হাসপাতালগুলিতে তা মিলবে। তবে, সেই ইঞ্জেকশন যাতে হাসপাতাল থেকে চুরি হয়ে বাইরে চড়া দরে না বিক্রি হয় সেদিকে কড়া নজরদারিও চলবে। সম্ভবত স্বাস্থ্যসাথী(Sasthsathi) কার্ডের মাধ্যমে যারা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা করাবেন কেবলমাত্র তাঁদের ক্ষেত্রেই এই ইঞ্জেকশন বিনামূল্যে মিলতে পারে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ভিন রাজ্যে বা এই রাজ্যেরই কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে এই ইঞ্জেকশন বিনামূল্যে মিলবে কিনা তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে চাহিদা অনুযায়ী এই দামী ইঞ্জেকশন রোগীদের দেওয়া হবে বলেই স্বাস্থ্যদফতর সূত্রে জানা