নিজস্ব প্রতিনিধি: ফি বছর বাংলার(Bengal) বুকে হাতির(Elephant) হামলায় বেশ কিছু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। হাজারো চেষ্টাতেও সেই ছবি বদলানো যাচ্ছে না। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নির্দেশে এবার বাংলার বুকে হাতির তাণ্ডবে প্রাণ ও সম্পত্তিহানি রুখতে কোমর বেঁধে নামছে রাজ্যের বনদফতর(Forest Department)। ঠিক করা হয়েছে ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলার বুকে মোট ১৯টি হাতির করিডর(Corridor) তৈরি করা হবে যেখানে হাতির পছন্দের পেট ভরানোর মতো খাবার থাকবে। এই ১৯টি করিডরের মধ্যে উত্তরবঙ্গে(North Bengal) গড়ে তোলা হবে ৮টি ও দক্ষিণবঙ্গে(South Bengal) ১১টি। এই করিডর গড়ে তোলার দায়িত্বে থাকবে রাজ্যের বনদফতর। দামালের দল ওই করিডর দিয়ে যাতায়াত করতে যাতে বাধ্য হয়, সেরকম ব্যবস্থাও থাকবে। এই লক্ষ্য সামনে রেখে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন দোরে দোরে কড়া নেড়েও প্রার্থী জুটছে না বঙ্গ বিজেপির
প্রতিবছর ঝাড়খণ্ড থেকে দলমার দাঁতালরা খাবারের সন্ধানে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তাঁদের হামলার জেরে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলায় ফি বছর মানুষ মারা যান। এর পাশাপাশি শস্যহানী, সম্পত্তিনষ্টের ঘটনা তো রয়েইছে। পুরুলিয়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলায় হাতির হামলায় প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটলেও সেখানেও দামালরা মাঝেমধ্যেই হামলা চালিয়ে ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে, গ্রামের মানুষদের বাড়ির খাবারদাবার লুঠ করে। আবার উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায় হাতির হামলায় প্রাণহানীর ঘটনা বাড়ছে। সেই সঙ্গে কোচবিহার জেলাতেও হাতির হামলার ঘটনা ঘটছে। এই সব ঘটনা ঠেকাতে রাজ্যের বনদফতর মোট ১৯টি হাতির করিডর গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছে। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে দু’কিলোমিটার ব্যাসার্ধের বৈদ্যুতিক বেড়া লাগানো একটি এলাকার মধ্যে হাতির বিভিন্ন খাদ্য ও জল রাখা থাকবে। রাখা হবে নুনও। ওই এলাকার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট পথ দিয়ে ঢুকে আরেকটি পথ দিয়ে বনের মধ্যেই চলে যেতে পারবে হাতির দল। পেট ভরে গেলে হাতির লোকালয়ে ঢুকে পড়ার প্রবণতাও কমবে।
আরও পড়ুন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বোনাস বাড়ছে, সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর
যে ১৯টি করিডর গড়ে তোলা হবে তার একএকটি গড়ে তুলতে ২৫ কোটি টাকা লাগবে। রাজ্য সরকার সেই রকমভাবেই মোট ৪৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্রতিটি করিডর ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২০০ মিটার চওড়া হবে। এর ফলে বন্যপ্রাণের নিরাপত্তা যেমন বাড়বে, তেমনই সাধারণ মানুষের বিপদও কমবে। দক্ষিণবঙ্গের ঝাড়গ্রামে ৩টি, বাঁকুড়ায় ৩টি, পুরুলিয়াতে ৩টি ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ২টি এবং উত্তরবঙ্গে ৮টি করিডর গড়ে তোলা হচ্ছে।